বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হলে আগে বন রক্ষা করতে হবে

দেশে অবাধে হাতি নিধন চলছে। গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাতি হ্রাস পেয়েছে। মানুষের হাতে যেভাবে হাতি নিধন হচ্ছে এবং হাতি সংরক্ষণে কর্তৃপক্ষ যেভাবে উদাসীনতা প্রদর্শন করছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছর পর চিড়িয়াখানা ছাড়া দেশের আর কোথাও হাতির অস্তিত্ব থাকবে না। হাতিসহ বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হলে আগে বন রক্ষা করতে হবে।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিশ্ব হাতি দিবস ২০২২ উপলক্ষে ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের জোট ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’ আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, এশিয়ান হাতির একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা সহজে কাউকে আঘাত করে না। কিন্তু এখন তারা পাশবিক অত্যাচারের শিকার। এক সময় হাতিরঝিল ও পিলখানায় হাতি দেখা যেত, হাতিরঝিল থেকে পিলখানায় হাতি নেওয়া হতো যত্ন করার জন্য। কিন্তু আজ আর সেই হাতি দেখা যায় না। হাতি কমতে কমতে দেশে হাতির সংখ্যা এখন প্রায় ২০০। হাতি রক্ষা করতে হলে হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়ে সংরক্ষিত বন তৈরির মাধ্যমে হাতি সংরক্ষণ করতে হবে। বন-জঙ্গলের ভেতর দিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলেও হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সময় আমাদেরকে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নে কর্মক্ষেত্রে যুবকদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে

বিএনসিএ’র আহ্বায়ক ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, হাতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্যপ্রাণী। হাতিসহ সব ধরনের বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হলে আমাদেরকে আগে বনাঞ্চল রক্ষা করতে হবে। দেশে বন থাকলে হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী থাকবে।

বক্তারা বলেন, আগামী দিনে হাতি সংরক্ষণ না করলে এবং মানুষের হাতে হাতি নিধন বন্ধ করতে না পারলে বিশাল দেহের ডাইনোসরের মতো হাতিও এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না।

জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ও রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজের পরিচালনায় ওয়েবিনারের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিজিইডি) নির্বাহী পরিচালক আবদুল ওয়াহাব, নোঙরের চেয়ারম্যান সুমন শামস, পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক ড. মাহমুদা পারভিন, বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ, ন্যাচার লাভিং পিপলের (এনএলপি) সভাপতি এহসানুল হক জসীম, এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ, মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের (এমজেএন) সাদিয়া চৌধুরী, আমিনুল মিঠু, শহীদ হাসান খান, নয়ন সরকার, আলমগীর হোসাইন, স্বপন কুমার নাথ প্রমুখ।

এমএইচএন/এসএসএইচ