ররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দৃঢ় সমর্থন চেয়ে এ সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘নিউলাইনস ইনস্টিটিউট অন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি’তে রোহিঙ্গা বিষয়ক এক আলোচনা সভায় ওয়াশিংটনের প্রতি এই আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ ও সম্মানের সঙ্গে তারা যেন সেখানে ফেরত যেতে পারে সেজন্য ওয়াশিংটনকে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উপায়ে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার ওপর জোর দেন।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মোমেন দেশটিকে নেইপিদোতে রোহিঙ্গা বিষয়ক একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে তিনি এর উপকারিতা হিসেবে উল্লেখ করেন যে, স্থায়ী সমাধানে বিশেষ দূত গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

অনুষ্ঠানে মোমেন রোহিঙ্গাদের করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রমগুলো তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন।

এ সময় মোমেন করোনা মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কীভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখছে তার ব্যাখ্যাও তুলে আনেন।

একইদিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনসিসের কংগ্রেসওমেন জেন সাকওসকির সঙ্গেও ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন। কংগ্রেসওমেন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন সরকারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক সহায়তা এবং ঢাকাকে রাজনৈতিক সমর্থন দেওয়ায় প্রশংসা করেন।

মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবীদের মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ ও জিএসপি সুবিধা বন্ধ করার বিষয়ে জোর দিতে অনুরোধ করেন। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা জন কেরির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ঢাকা-ওয়াশিংটন।

বর্তমানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। মূলত ওয়াশিংটনের নতুন সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতেই এ সফর।

সফরের প্রথম দিনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (সেক্রেটারি অব স্টেট) অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন মোমেন। আলাপে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানো, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফেরত, করোনা পরিস্থিতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবাধিকার ও অভিবাসী ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।

পরদিন মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেইস মেংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি দেশটিতে অনিবন্ধিত বাংলাদেশিদের বৈধ করতে ওয়াশিংটনকে অনুরোধ জানান। সবশেষ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন।

এনআই/জেডএস