পঞ্চম ধাপের পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
রংপুরের হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের অপেক্ষা
পঞ্চম ধাপে ২৯টি পৌরসভা ও চারটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ টানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
তফসিল অনুযায়ী, ২৯টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও চারটি উপজেলা পরিষদে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে নির্বাচন হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পঞ্চম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ ধাপে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান ইসি সচিব।
ইসি জানায়, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ফরিদপুরের মধুখালী, রাজশাহীর পবা ও কুমিল্লার দেবিদ্বারে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন হচ্ছে। এছাড়া আগে অনুষ্ঠিত সাতটি পৌরসভায় স্থগিত কেন্দ্রগুলোতে ও মৃত্যুজনিত কারণে চট্টগ্রাম সিটির ৩১ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে, ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৮ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ও সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির ওয়ার্ডটি ও শৈলকুপার ওয়ার্ডটিতে ভোট হবে ইভিএমে। এ উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বাড়তি সদস্য মাঠে নেমেছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রচারণা।
বিজ্ঞাপন
ইসি আরও জানায়, পঞ্চম ধাপে নির্বাচনের জন্য ১৯ জানুয়ারি ৩১ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। পরে অন্য ধাপ থেকে পঞ্চম ধাপে যুক্ত হয় সৈয়দপুর পৌরসভা। অপরদিকে উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে যশোর পৌরসভার ভোট স্থগিত করা হয়। ভোটগ্রহণের আগ মুহূর্তে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরসহ সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। যার ফলে আজ ২৯টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
যে ২৯ পৌরসভায় আজ ভোট
যশোরের কেশবপুর; ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর; চট্টগ্রামের মিরসরাই, বারইয়ারহাট ও রাঙ্গুনিয়া; কিশোরগঞ্জের ভৈরব; জামালপুরের সদর, মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর; ময়মনসিংহের নান্দাইল; মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ; রংপুরের হারাগাছ; রাজশাহীর দুর্গাপুর ও চারঘাট; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল; বগুড়া সদর; জয়পুরহাট সদর; মাদারীপুর সদর ও শিবচর; ভোলা সদর ও চরফ্যাশন; হবিগঞ্জ সদর; চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও মতলব; ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর; লক্ষ্মীপুরের রায়পুর এবং রংপুরের সৈয়দপুর পৌরসভা।
এসব পৌরসভায় ২৯১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১ হাজার ২৭০ জন, ৯৭টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৪২ জন ও ২৯টি মেয়র পদে ১০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৬২৫টি ভোট কেন্দ্রের ৪ হাজার ২২৯টি ভোটকক্ষে ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৯০ ও নারী ভোটার ৭ লাখ ১১ হাজার ৮৫০ জন।
দেশে পৌরসভা রয়েছে ৩২৯টি। প্রথম ধাপের তফসিলের ২৪টি পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৬১ পৌরসভায় ভোট হয়েছে। আর তৃতীয় ধাপে ৬৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয় ৩০ জানুয়ারি। চতুর্থ ধাপে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট হয়েছে। আর পঞ্চম ও শেষ ধাপে ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে পৌরসভায় ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর ২০১৫ সালে প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হয় পৌরসভায়। সেবার ২০টি দল ভোটে অংশ নেয়।
এসআর/এসএসএইচ