বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির বিষয়টি ঢাকায় নিযুক্ত অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) দেশগুলোর দূতদের জানিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে ঢাকার অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেক্ষেত্রে আসিয়ানের সমর্থন চাওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকায় আসিয়ানের যেসব রাষ্ট্রদূত আছেন, তাদের নিয়ে বৈঠক করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম মিয়ানমার ইস্যুতে সীমান্তে যে সব কর্মকাণ্ড হচ্ছে, সেগুলো রাষ্ট্রদূতদের জানান।

বৈঠকে দূতদের কোন কোন বিষয়ে ব্রিফ করা হয়- জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আঞ্চলিকভাবে তাদের (আসিয়ান) গুরত্বটা বেশি। তারা ওই ফোরামের সদস্য। এ কারণে তারা বিশেষ গুরুত্ব রাখে। তাদের বলা হয়েছে, মিয়ানমারের মর্টারের গোলা এসে পড়ছে, এয়ার ফায়ারিং হচ্ছে, আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এগুলো যেমনি প্রাণহানি ঘটাচ্ছে, তেমনি মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। মানুষের জীবিকার ওপর প্রভাব পড়ছে, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সেখান থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এগুলো কোনোভাবেই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, এগুলোর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু ফেস আমরা করছি। মিয়ানমারের দূতকে ডেকে বিষয়টি জানিয়েছি, সেটাও বলা হয়েছে। তাদের (আসিয়ান) সমর্থন যেন আমাদের সঙ্গে থাকে, তা বলা হয়েছে।

আসিয়ানের দূতদের অবস্থান জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, তারা (দূতরা) বলেছেন, এগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত। এর সঙ্গে বাংলাদেশ কোনোভাবে সম্পৃক্ত না। তারা বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের প্রশংসা করেছেন। তারা বলেছেন, তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নতুন করে গোলাগুলি শুরু হয়। ওইদিন রাত ৮টার দিকে একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে। এতে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়। 

ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।

এর আগে কয়েক দফায় মিয়ানমার থেকে মর্টারশেল ও গোলা এসে পড়ে বাংলাদেশের ভেতরে। ওইসব ঘটনায়ও মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। 

এনআই/আরএইচ