কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ স্থানীয়দের জন্য পানি সরবরাহ ও বন্টন ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপান সরকার এবং জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) প্রায় দশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিতে একটি চুক্তি করেছে।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইউএনএইচসিআর ও ঢাকার জাপান দূতাবাস চুক্তিটি স্বাক্ষর করে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ইউএনএইচসিআরের ঢাকা অফিস।

ইউএনএইচসিআর ঢাকা কার্যালয়ে সংস্থাটির বাংলাদেশের সহকারী প্রতিনিধি ফুমিকো কাশিওয়া ও জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন।

ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রকল্পটি তিনবছর মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে এবং বাংলাদেশ সরকারসহ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসক কক্সবাজারের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও নেতৃত্বের মাধ্যমে শেষ হবে। 

সংস্থাটি বলছে, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণে দীর্ঘদিন ধরে নানারকম প্রতিকূলতা মোকাবিলা করছে। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে ওঠে। এ সহায়তা পানি সরবরাহ স্থিতিশীল করতে এবং উভয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে অবদান রাখবে।

সংস্থাটির বাংলাদেশের সহকারী প্রতিনিধি ফুমিকো কাশিওয়া বলেন, ‘২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আসা শুরু হলে টেকনাফ-উখিয়ার স্থানীয় জনগোষ্ঠী সর্বপ্রথম রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়াসহ খাবার ও পানি সরবরাহ করে। স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণ উদারভাবে এ সঙ্কটাপন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।’

রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে এখন পর্যন্ত সফলভাবে সহায়তা দেওয়ার জন্য আমি জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রশংসা করি। এ প্রকল্পটি থেকে স্থানীয় এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী উভয়ই সুবিধা ভোগ করতে পারবে। আমি আন্তরিকভাবে আশাবাদী যে এ প্রকল্পটি টেকনাফের স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং শরণার্থীদের পানি সমস্যার সমাধানে সহায়তা করবে ও বাংলাদেশের স্থিতিশীল উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, এ সুবিধাভোগীদের জন্য জাপানের মানবিক সহায়তা ১৪০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে এবং জাপান ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিকের অনুসরণে বাংলাদেশকে সমর্থন করা অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আসা শুরু হওয়ার পর থেকে জাপান সরকার আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলোকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উভয়কে সহায়তা করার জন্য প্রায় ১৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে।

এনআই/এসএম