‌‘আগে শুনেছি গুন্ডারা চর দখল করত। একজনের জমি আরেকজন দখল করত। কিন্তু এখন দেখছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাও বিশ্ববিদ্যালয় দখল হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় মানারাত ইউনিভার্সিটি দখল করা হয়েছে। অবিলম্বে মানারাত ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড দখলমুক্ত না করলে জনগণ রাস্তায় নামবে।’

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজ আয়োজিত অবৈধভাবে মানারাত ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড দখলের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

অধ্যাপক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘আজকের এ মানববন্ধন দেশের শিক্ষা বাঁচানোর আন্দোলন। মানারাতের অপরাধ মানারাত জ্ঞানভিত্তিক সমাজ চায়। তারা চোর উৎপাদন না করে দেশপ্রেমিক সমাজ চায়। আজ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।’ 

‘এ প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। সেই ট্রাস্টি ভেঙে সরকারের দালালদের প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। দেশে শনির দশা পেয়েছে। এই শনিকে শৃঙ্খলিত করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী আপনি নাকি ডাক্তার। তাহলে আপনি এত অসভ্য কেন। বিকারগ্রস্ত না হয়ে স্বাভাবিক হন। মানারাত ধ্বংস করে আপনার কি লাভ হবে? এ দিন দিন নয় আরও দিন আছে।’

প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বিড়ালও পালানোর পথ রাখে। আপনারা কী করছেন। অনেক করেছেন। এবার পালাবার পথ খুঁজেন। দখল মতলবে মতিঝিল আইডিয়াল, মনিপুর স্কুলকে এভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’ 

মেয়র আতিকুল ইসলামের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মেয়র সাহেব ভবিষ্যতে কি আপনার চামড়ার চিন্তা নেই। আতিক ভাই মানুষ হন। আপনি কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘাড়ে চেপে বসছেন?’ 

দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমি আজকের বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আজ মানারাত নিয়ে আরেকটি অন্যায় আমাদের সামনে এসেছে। অন্যায়কে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে হবে। মানারাত দখলকারীদের বলব এমন দিন আসবে যেদিন আপনারা ডুবে যাবেন।’

মানারাত ইউনিভার্সিটির ছাত্র উপদেষ্টা শেখ আল আমিন বলেছেন, ‘মানারাতের উদ্যোক্তারা রক্ত পানি করে প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন সত্যিকার মানুষ তৈরির জন্য। আজ সেই বিশ্ববিদ্যালয় দখল করা হচ্ছে। এটি লজ্জাজনক। বিশ্বে এমন ইতিহাস নেই।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের ক্ষমতা থাকলে আরও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে জনগণকে দেখিয়ে দেন। জনগণ এখনো রাস্তায় নামেনি। জনতার বিক্ষোভ ও রাস্তার নামার আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের কাছে দায়িত্ব ফিরিয়ে দিয়ে চলে যান। আমরা চর দখলের মতো বিশ্ববিদ্যালয় দখল যেন না হয় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে দেখার অনুরোধ করছি।’ 

ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানুষ গড়া হয় সেখানে আজ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সব সেক্টর খাওয়ার পর এখন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো ধ্বংসে হাত দিয়েছেন। আপনাদের দখলে ইডেনে কী অবস্থা তা জাতি দেখেছে। আপামর জনতা এই ষড়যন্ত্র রুখবে। ৪০০০ শিক্ষক কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকিতে ফেলে দিয়ে আপনারা শান্তিতে গুমাতে পারবেন না। নতুন ট্রাস্টি বোর্ড বাতিল করুন। এসব প্রতিষ্ঠান মানুষের রক্তে গড়া। সরকারি টাকায় নয়৷’ 

মানববন্ধনে চিকিৎসাবিদ ডা. মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি গোলাম রহমান, অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক, পরিবেশবিদ অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, নুরুল আমিন রোকন প্রমুখ।  

আইবি/এসকেডি