নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা বেশি, সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা
ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বুধবার সপ্তাহব্যাপী এই বিশেষ অভিযান শুরু হয়, যা চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।
অভিযানের প্রথম দিনে ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। নির্মাণাধীন বাড়ি বা ভবনগুলোতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ২০টি মামলার মাধ্যমে ছয় লাখ ৬৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন।
বিজ্ঞাপন
অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন মগবাজার এলাকা থেকে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা অভিযানের উদ্বোধন করেন।
শুরুতেই মগবাজার এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে পাঁচটি নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় পাঁচটি মামলায় মোট দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ম্যাজিস্ট্রেট।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন কাওরানবাজার এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ অভিযান চালান। এ সময় নির্মাণাধীন বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-২ এর আওতাধীন পল্লবী, রুপনগর ও শাহ আলী থানা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান অভিযান চালান। অভিযানে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় পাঁচটি মামলায় মোট এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-৬ এর আওতাধীন উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন। উত্তরা এলাকায় অভিযান চালানোর সময় দুটি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। দুই ভবন মালিককে দুটি মামলায় ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অঞ্চল-৮ এর আওতাধীন উত্তরার আরেকটি এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ অভিযান চালান। এ সময় একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় একটি মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়াও অঞ্চল-১ এর আওতাধীন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটারা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন অভিযান চালান। অভিযানে সাতটি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় দুটি মামলায় মোট চার হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং পাঁচটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
অঞ্চল-৯ এর আওতাধীন ছোলমাইদ এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান চালান। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় দুটি মামলায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, বর্তমানে পুরো দেশেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের সবাইকে এডিস মশা নিধনে সচেতন হতে হবে। সিটি করপোরেশন নিয়মিত মশা নিধনে কাজ করছে। নগরবাসীকেও দায়িত্ব নিতে হবে। কারো বাড়িতে এডিসের লার্ভা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মূলত বাসাবাড়িতেই এডিস মশার জন্ম হয়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিএনসিসির আওতাধীন দশটি অঞ্চলেই বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। দৈনন্দিন মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের ফলে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়বে। বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন ও সাবধান করা হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কাউন্সিলররা এই প্রচারাভিযানে অংশ নিয়েছেন।
এ সময় ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা লেফটেনেন্ট কর্নেল গোলাম মোস্তফা সারওয়ার বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
এএসএস/আরএইচ