যে ফেলোশিপ দিচ্ছি সেটা জনগণেরই অর্থ : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গবেষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা মনে রাখবেন, আমরা যে ফেলোশিপ দিচ্ছি বা অর্থ বরাদ্দ করেছি, সেটা কিন্তু জনগণেরই অর্থ। কাজেই তা যেন জনগণের কল্যাণেই আসে। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়ে আপনারা গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবেন।
বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের আরও মনোযোগের সঙ্গে মানবকল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গবেষণা ও বিজ্ঞানের বিবর্তন দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। সবসময় মানবকল্যাণেই কাজ করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জায়গা কম হলেও সে জায়গার সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমেই আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সমর্থ হয়েছি। কাজেই সেটা মাথায় রেখেই গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি হলে দেশে এবং বিদেশেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাবে। আমরা সেদিকেই লক্ষ রাখছি। প্রতিটি শিল্প-কারখানায় গবেষণা ও উন্নয়ন শাখাকে কার্যকরী এবং শক্তিশালী করতে হবে।
সরকার সারাদেশে একশ’র বেশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। সেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই সেখানেও গবেষণা একান্তভাবে প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণার মাধ্যমেই আমরা ব্যয় কমাতে এবং উৎপাদনের উৎকর্ষতা বাড়াতে পারি। এছাড়াও বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে রফতানি বাড়াতে পারি।
রফতানি পণ্য বাড়ানোর জন্যও গবেষণার প্রয়োজন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি আশা করি নতুন নতুন পণ্য সৃষ্টি এবং আমাদের রফতানি যেন অব্যাহত থাকে, সেদিকে বিশেষভাবে আপনারা দৃষ্টি দেবেন।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে এতে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আনোয়ার হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ফেলোশিপ এবং অনুদানের চেক বিজ্ঞানী ও গবেষকদের হাতে তুলে দেন।
যারা ফেলোশিপ পেয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণা এবং বিজ্ঞানের প্রসার একটি দেশের উন্নয়নে একান্ত অপরিহার্য। কাজেই আপনারা গবেষণা চালিয়ে যাবেন। আপনাদের পথ ধরে আগামী প্রজন্মও বিজ্ঞানের গবেষণা করবে, সেটাই আমরা চাই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক তৈরির লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে বিজ্ঞান প্রযুক্তি গবেষণা-অধ্যয়নে এমএস, এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর প্রোগ্রামের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ’ প্রদান করা হয়। ২০১০-১১ অর্থবছর থেকে চলতি (২০২০-২০২১) অর্থবছর পর্যন্ত ৫৯৬ জনকে ১৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ফেলোশিপ প্রদান করা হয়েছে।
তাছাড়া এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর পর্যায়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপের আওতায় ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত ১৯ হাজার ৭৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের মধ্যে ১২১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে।
ফেলোশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে উৎসাহ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে বিশেষ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। গত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৮২টি প্রকল্পের অনুকূলে ১৫২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
বাসস
এমএইচএস/এমএমজে