হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে নাম-পরিচয় ও পেশা পরিবর্তন করে ছদ্মবেশ ধরে দীর্ঘ ২৪ বছর আত্মগোপনে ছিলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সোহরাব হোসেন (৪৫)।

প্রথমে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চার বছর, মিরপুরে সাত বছর, তেজগাঁও এলাকায় তিন বছর এবং সাভারের জিরানীতে দীর্ঘ ১০ বছরসহ ২৪ বছর আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সোহরাব হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২ এর একটি দল।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় র‍্যাব-২ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান।

তিনি জানান, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে যশোরের কোতয়ালি থানা এলাকায় মাছের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগী শুক্কুর আলীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে আসামি সোহরাব হোসেন ও তার সহযোগী আশরাফ, রেজাউল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম ও খোকন ঢালী।

ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবার বাদী হয়ে যশোরের কোতয়ালি থানায় পাঁচ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

সিও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত সম্পন্ন করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় এজাহারনামীয় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আদালতে দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২০০২ সালে ১নং আসামি সোহরাব হোসেন, ২নং আসামি আশরাফ, ৫নং আসামি খোকন ঢালীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দুই জনকে খালাস দেন। এদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১নং আসামি সোহরাব হোসেন দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামি জানিয়েছে গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য প্রথমে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চার বছর, মিরপুরে সাত বছর, তেজগাঁওয়ে তিন বছর এবং সাভারের জিরানীতে দীর্ঘ ১০ বছরসহ মোট ২৪ বছর বিভিন্ন পেশা ও বিভিন্ন নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপনে ছিলেন।

গ্রেপ্তার আসামি সোহরাব হোসেন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে৷ তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

জেইউ/এসএসএইচ/