রাজধানীতে ব্যবসায়ীর হাতে ঈশ্বরগঞ্জের রাজীবপুর ইউনিয়নের ১২ বছরের কন্যাশিশু গৃহপরিচারিকাকে নৃশংস নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মহিলা পরিষদ।

ওই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরে বসবাসকারী এক ব্যবসায়ীর বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করছিল ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের ওই কন্যাশিশু। দিনমজুর বাবা কিংবা মায়ের সঙ্গে দেখা না করার শর্তে প্রতি মাসে শিশুর সৎ মায়ের কাছে দুই হাজার করে টাকা পাঠাতেন ওই ব্যবসায়ী। 

তবে গত পাঁচ দিন আগে তার বাবার কাছে তিন হাজার টাকা পাঠিয়ে বলা হয় দ্রুত ঢাকায় যেতে। পরদিন ঢাকায় গেলে দিনমজুর মো. মুর্শেদ আলী জানতে পারেন একটি ক্লিনিকে ভর্তি আছে তার মেয়ে। 

ক্লিনিকে গিয়ে দেখতে পান, মেয়ের শরীরে অনেক যন্ত্রপাতি লাগানো এবং বুক থেকে তলপেট পর্যন্ত ব্যান্ডেজ করা। তারপর বাড়িওয়ালাসহ বেশ কিছু লোক গত মঙ্গলবার অস্ত্র দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কিছু কাগজে সই নিয়ে কন্যাশিশুটিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। কিন্তু মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত শুক্রবার দুপুরে মেয়েটির মৃত্যু হয়।

মহিলা পরিষদ মনে করে, সংঘটিত এ ঘটনা নারী ও কন্যার স্বাভাবিক জীবনযাপন ও তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নাজুক করে তুলেছে এবং দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দিনদিন নারী ও কন্যা শিশুরা বর্বর ও নৃশংসভাবে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে। 

অন্যদিকে বিচারের ক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থী নারী ও কন্যারা সুরক্ষা পাচ্ছে না। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সারাদেশে সংঘটিত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজকে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রয়োজনাীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছে।

মহিলা পরিষদ গৃহপরিচারিকাকে নৃশংসভাবে মারধর করে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার, তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছে।

জেইউ/জেডএস