রাজধানীর গুলশানে আগুনের ঘটনায় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। লাফিয়ে পড়ে ওই ব্যক্তির (৩০) মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

রোববার রাত ১০টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গুলশানের আগুনের ঘটনায় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি, জানার চেষ্টা চলছে।

এদিকে, আগুন লাগা আবাসিক ভবন থেকে এখন পর্যন্ত ৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আটকেপড়া অন্যদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। উদ্ধার করা ৬ জনের মধ্যে ৩ জন পুরুষ, ৩ জন নারী।

১২ তলা আবাসিক ভবনটিতে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট।

আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে উৎসুক জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

এ সময় ডিএনসিসি মেয়র হ্যান্ড মাইক দিয়ে ফায়ার সার্ভিসকে কাজের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং পুলিশকে ঘটনাস্থল থেকে সবাইকে সরানোর জন্য নির্দেশ দেন।

এদিকে ভবনে আটকে পড়াদের উদ্ধারে কালক্ষেপণ করায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের ওপর চড়াও হয়েছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।

বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন আগুনে আক্রান্তরা

ওই ভবনের নিচে থাকা সুলেমান চৌধুরী নামের একজন ঢাকা পোস্টকে জানান, তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফোন দিয়ে জানিয়েছেন, ‌‘ভাইয়া আমি ১১ তলায় আটকে পড়েছি। আমার সঙ্গে আরও মানুষ আছে। দ্রুত লোক পাঠিয়ে আমাদের বাঁচান, প্লিজ।’

তিনি জানান, তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ভবনটির পাঁচ তলায় থাকেন। সঙ্গে তার স্বামীও থাকেন। কিন্তু তার স্বামী বর্তমানে বিদেশ রয়েছেন। ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পেশায় একজন চিকিৎসক। 

সুলেমান চৌধুরী বলেন, কিছুক্ষণ আগে ফোন করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী জানান, আগুন লাগার সময় তিনি বাসায় ৫ম তলায় ছিলেন। আগুন লাগার পর ধোঁয়ার কারণে নিচে নামতে পারেননি। জীবন বাঁচাতে ওপরে চলে গেছেন।

এদিকে ঘটনাস্থলে কর্মরত ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত ভেতর থেকে ৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন বলেন, প্রথমে ৬টি, পরে ৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় পরে দুই দফায় আরও ৬টি করে ১২টি ইউনিট কাজে যোগ দেয়। বর্তমানে ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

এসএএ/ওএফ