বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গভীর উদ্বেগ এবং বিদ্যুৎ খাতের চুক্তিসমূহ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় সংগঠনটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের বিদ্যুৎ খাত নিয়ে একের পর এক অবিবেচনা প্রসূত ও জনস্বার্থ পরিপন্থী সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে। যা এ খাতটিকে ক্রমশ গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সম্প্রতি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভারতের বিতর্কিত আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের অসম, বৈষম্যমূলক চুক্তির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। চুক্তিতে বর্তমান বাজার দর থেকে কয়েকগুন বেশি দামে আদানি গ্রপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের কথা বলা হয়েছে, যা দেশের মানুষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে বলে আমরা মনে করি। গত ২৯ জানুয়ারি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সরাসরি বাড়ানো বা কমানোর ক্ষমতা সরকারের হাতে দিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন), বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়। এ আইনে গণশুনানির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিদ্যুৎ খাতের এসব ঘটনার মধ্যেই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ডলারের চলতি বিনিময় হার ধরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে নতুন চুক্তি করছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গত এক বছরে ডলারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পিডিবিকে ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় করতে হয়েছে। এমতাবস্থায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে নতুন করে ডলারে চুক্তি আমাদের বিদ্যুৎ খাতকে আরও সংকটে ফেলে দেবে। ধারণা করা যায় যে, গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেই এ বাড়তি ব্যয় মেটানো হবে, যা জনগণের জীবনযাত্রাকে আরও দুর্বিষহ করে তুলবে। আমরা সরকারকে ডলারে চুক্তির এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে যে ক্ষেত্রে একান্তই ডলার ব্যতীত বিনিময় সম্ভব নয়, সেগুলো বাদে অন্যান্য বিনিময় দেশীয় মুদ্রায় করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

এছাড়া আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি স্পষ্টতই জনস্বার্থবিরোধী একটি চুক্তি। কারণ আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের তুলনায় কয়েক গুন বেশি দামে কিনতে হবে। একইসঙ্গে গুণতে হবে কয়লা সরবরাহকারী, পরিবহনকারী ও বন্দর অপারেটরদের সব জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ। এরসঙ্গে আরেকটি প্রধান বিষয় হলো ক্যাপাসিটি চার্জ, যা আদানি গ্রুপের সঙ্গে স্বেচ্ছায় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ চুক্তিটিও পুনর্বিবেচনা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ওএফএ/এফকে