চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় পরিচালক পারভেজ উদ্দিনকে (৪৮) জামিন দিয়েছে আদালত। বুধবার (২২ মার্চ) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালত এ আদেশ দেন।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সদর কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন মাহমুদ।

এর আগে গত ১৪ মার্চ সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের মামলার আসামি পারভেজকে নগরের জিইসি মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহতরা হলেন- লক্ষ্মীপুর কমলনগর এলাকার মহিজল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (৩৩), নেত্রকোনার কলমাকান্দা এলাকার খিতিশ রংদীর ছেলে রতন নকরেক (৫০), নোয়াখালীর সুধারাম এলাকার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে আব্দুল কাদের মিয়া (৫৮), সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার মৃত বিম রুগার ছেলে সেলিম রিছিল (৩৯), একই এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে শামসুল আলম (৬৫), সীতাকুণ্ডের জাফরাবাদ এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে মো. ফরিদ (৩২) ও সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার মৃত মতি লাল শর্মার ছেলে প্রবেশ লাল শর্মা (৫৫)।

বিস্ফোরণের ঘটনায় ৬ মার্চ রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়। বিস্ফোরণে প্রাণ হারানো আব্দুল কাদের মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে আসামি করা সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের এমডি মো. মামুন উদ্দিন (৫৫), পরিচালক পারভেজ উদ্দিন (৪৮) ও আশরাফ উদ্দিন বাপ্পি (৪২), ম্যানেজার আব্দুল আলীম (৪৫), প্ল্যান্ট অপারেটর ইনচার্জ সামসুজ্জামান শিকদার (৬২), প্ল্যান্ট অপারেটর খুরশিদ আলম (৫০), সেলিম জাহান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, অ্যাডমিন অফিসার গোলাম কিবরিয়া, অফিসার শান্তনু রায়, সামিউল, সুপারভাইজার ইদ্রিস আলী, সানা উল্লাহ, সিরাজ উদ-দৌলা, রাকিবুল ও রাজীবকে।

মামলার এজাহারে বাদী রোকেয়া বেগম উল্লেখ করেন- তার স্বামী ১০-১৫ দিন আগে ফোনে একবার বলেছিলেন, 'কারখানায় অর্থের অভাবে অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের ছাঁটাই করছে। বর্তমানে যারা কাজ করছে তারা অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ। আল্লাই জানে, কখন কী দুর্ঘটনা ঘটে যায়।' একথা শুনে তারা খুব চিন্তিত ছিলেন। এর মধ্যে ৪ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত কারণে কারখানার অক্সিজেন কলামে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে বাদী তার স্বামীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে পায়। সেখানে তার স্বামী কিছুক্ষণ চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। 

এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন- কারখানা মালিক ও আসামি হওয়া কর্মকর্তারা যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তারা বিপজ্জনকভাবে গ্যাস উৎপাদন, ভর্তি ও সরবরাহ করতেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনা মোকাবেলা করার মতো প্রশিক্ষিত জনবল রাখেননি। এতে করে বিস্ফোরণে তার স্বামীসহ সাতজন মারা যান। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক), ৩৩৭, ৩৩৮ ও ৪২৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এমআর/জেডএস