বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে আগ্রহী মালদ্বীপ। এক্ষেত্রে আকাশ এবং নৌপথে যোগাযোগ স্থাপনে দেশটির সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এই আগ্রহের কথা জানান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। সন্ধ্যা ৭টায় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সস্ত্রীক বঙ্গভবনে গেলে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী রাশিদা খানম তাদের অভ্যর্থনা জানান। পরে দুই রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠকে বসেন। তথ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ১৮ মার্চের তথ্য বিবরণীতে এ বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে।  

এতে আরও বলা হয়েছে, সাক্ষাতের সময় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে খুবই গুরুত্ব দেয়। আকাশ ও নৌ পথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা পেলে বাণিজ্য-বিনিয়োগ আরও সম্প্রসারিত হবে। এ ব্যাপারে তার সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। 

রাষ্ট্রপতি এ সময় বলেন, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে ঢাকা ও মালের মধ্যে সরাসরি নৌ যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপ উভয়ের পর্যটন সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে  দু’দেশের বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। রাষ্ট্রপতি মালদ্বীপে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকা দেওয়ায় সে দেশের সরকারের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ মালদ্বীপে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ জনবল পাঠাতে প্রস্তুত আছে।

রাষ্ট্রপতি চিকিৎসা ও প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশকে বেছে নেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আরও বেশি মালদ্বীপের শিক্ষার্থীর শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। বাংলাদেশ তাদের স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ওষুধ, তৈরি পোশাক, সিরামিকসহ বিশ্বমানের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে। মালদ্বীপ বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য আমদানি করতে পারে। এতে উভয় দেশ লাভবান হবে। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে বিভিন্ন সমঝোতা স্মারকের উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের এই সফর দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে অনন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। 

এদিকে মালদ্বীপের ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদ এবং রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম কুশল বিনিময় করেন। এ সময় রাশিদা খানম নারীর উন্নয়নও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। ফাজনা আহমেদ নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে  বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশে তার এই সফর অত্যন্ত সুখকর।

পরে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বঙ্গভবনের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া বঙ্গভবনের দরবার হলে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেন।

নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মালদ্বীপের ফার্স্ট লেডি, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, তিনবাহিনীর প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এনএফ