চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ফলমন্ডি এলাকায় খেজুর আমদানিকারকদের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। 

শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম ও প্রতীক দত্তের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় খেজুর আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি এবং বেশিদামে বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়ম চোখে পড়ে জেলা প্রশাসনের। এসব অনিয়মের দায়ের তিন আমদানিকারককে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জেলা প্রশাসন জানায়, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ৪০ হাজার ২৪ টন খেজুর আমদানি হয়েছে। এগুলোর গড়মূল্য ৮৯ টাকা ৩৬ পয়সা। কিন্তু ফলমন্ডির আড়তে গিয়ে দেখা যায় পাইকারি বাজারে বিভিন্ন জাতের খেজুর চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কেজিপ্রতি আজওয়া ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকা, মাবরুম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, মরিয়ম ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, দাবাস ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, জাহিদি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মেজডুল ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা এবং আলজেরিয়া ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

অভিযানে দেখা যায়, আমদানিকারক আল্লাহর রহমত স্টোর গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ২৫৭২ টন  খেজুর আমদানি করেছে। মোট ৩৩টি এলসির মাধ্যমে ৭০ দশমিক ১৪ টাকা দরে এসব খেজুর আমদানি করা হয়। কিন্তু দোকানটিতে জাহিদি, নাসার, আল মাদাফ, ফারাহসহ মধ্যম জাতের খেজুর আমদানিমূল্যের চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এসবের দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

রমজানকে সামনে রেখে আলী জেনারেল ট্রেডিং কেজিপ্রতি ১০৪ টাকা দরে মোট ১৬৮ টন খেজুর আমদানি করে। কিন্তু দোকানটিতে জাহিদি খেজুর ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া অ্যারাবিয়ান ফ্রুটস ফ্যাক্টরি লিমিটেড ৮৪ দশমিক ৬৪ টাকা কেজিদরে মোট ৯২১১ টন খেজুর আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটি একটি এইচএস কোড দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জাতের খেজুর আমদানি করে। এর মধ্যে আজওয়া, মেজডুল, মাবরুক, সাফওয়া, মরিয়মসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের খেজুর রাজস্ব ফাঁকি দিতে কমদাম দেখিয়ে আমদানি করা হয়। পরে এসব খেজুর বেশি দামে বিক্রি করছে। আমদানিকারক এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে চট্টগ্রামে খেজুর বিক্রি করা দোকান ফ্রেশ ফ্রুট গ্যালারিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন নেতার যোগসাজশে কমদামে খেজুর আমদানি করে বেশিদামে বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এমআর/জেডএস