রোজাদারদের পাতে ইফতার দিচ্ছেন এবং পথচারীদের ডেকে বসাচ্ছেন একসঙ্গে ইফতার করার জন্য। সোমবার (৩ এপ্রিল) এভাবেই আপ্যায়ন করলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এদিন প্রায় পাঁচশ সাধারণ মানুষ চসিক মেয়রের সঙ্গে ইফতার করেন। এ সময় সাধারণ লোকজন কাছে পেয়ে মেয়রকে বিভিন্ন অভিযোগ ও পরামর্শ দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের কোতোয়ালি থানার লালদীঘির পাড় চসিকের পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। মেয়রের এ উদ্যোগে এবারের রমজানের শুরু থেকে সোমবার পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ ইফতার করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন পথচারী, রিকশাচালক, শিক্ষার্থী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।  

এ বিষয়ে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরের প্রাণকেন্দ্র লালদীঘিতে সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে গৃহহীন, এতিম ও হতদরিদ্ররা যাতে ইফতার নিয়ে বিড়ম্বনায় না পড়ে, সেজন্য রমজান মাসজুড়ে বিনামূল্যে ইফতারের আয়োজন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিলাসী ইফতার পার্টির পরিবর্তে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়ে রোজার শিক্ষাকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। এরইমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে হাজারো মানুষের হাতে ইফতার সামগ্রী ও সাহরি পৌঁছে দিয়েছি। ঈদেও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকব। সমাজের বিত্তবান শ্রেণিকেও বলব আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা রোজাদারদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে।

আয়োজনের তত্ত্বাবধানে থাকা আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, মেয়রের এই মানবিক উদ্যোগ বাস্তবায়নে ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই প্রতিদিন রোজাদারদের সেবা দিচ্ছেন। চারজন বাবুর্চিকে সঙ্গে নিয়ে ইফতার পরিবেশন করে তারা ঘরে ফেরেন। ইফতারের আয়োজন শরবত ছোলা-মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি আবার কখনো বিরিয়ানি অথবা খিচুড়ি দিয়ে বৈচিত্র্যের স্বাদ দেওয়ার চেষ্টাও রয়েছে।

এদিন ইফতার করতে আসা নির্মাণশ্রমিক বাবুল মিয়া বলেন, আমার পরিবার থাকে ময়মনসিংহে। সারাদিন পরিশ্রম করার পর এখানে বিনামূল্যে ইফতার করতে আসি। আজকে মেয়র ইফতার তুলে দিয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবকরাও সহযোগিতা করছেন।

ইফতারিতে অংশ নেওয়া জাহিদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর এখন চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। সারাদিন লাইব্রেরিতে পড়ার পর এখানে ইফতার আর নামাজ আদায় করে টিউশনিতে ফিরি। মেয়রকে পেয়ে অনেক ভালো লাগল। তিনি ইফতারও করালেন আবার এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মানুষের সঙ্গে পরামর্শও করলেন।

এমআর/জেডএস