গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, তিনি আমাদের বারবার বলতেন লড়াই ছাড়া সমাধানের জায়গা নেই। এই লড়াইয়ের প্রেরণা জাফরুল্লাহ ভাই আমাদের মধ্যে ছড়িয়েছেন। আগামী প্রত্যেকটা লড়াইয়ে কোনো না কোনোভাবে তিনি উপস্থিত থাকবেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিনি কাজ করতেন। রাজনৈতিক সংকটের এখনো সমাধান হয়নি। এই সংকটের সম্ভাব্য সমাধান কী হতে পারে সেটা তিনি বহুবার বলেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আস্থার জায়গায় তিনি ছিলেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত ভরসা করেছেন সংগ্রামে।

তিনি বলেন, তার যে বহুমাত্রিক কীর্তি, এটা এ দেশের মানুষের সংগ্রামে, জীবনে ও অর্জনে নানাভাবে প্রকাশ পেয়েছে। আমাদের পূর্ব প্রজন্ম তার দ্বারা যেভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছে, বাংলাদেশের আগত প্রজন্মের কাজে জাফরুল্লাহ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। কারণ বাংলাদেশের মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে, সেটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সাংস্কৃতিক দিক থেকে, সেখানে জাফরুল্লাহ ভাই প্রাসঙ্গিক হবেন। এসব বিষয়ে তার চিন্তা ছিল, তিনি কাজ করেছেন, লড়াই করার চেষ্টা করেছেন। বাস্তবায়ন যোগ্য লক্ষ্যটা কী হতে পারে সেটা সবসময় দাড় করানোর চেষ্টা করেছেন। সমাজে বাস্তবসম্মত ভাবে কি পরিবর্তন আনা সম্ভব, সেখানে আমাদের সবার কাজ করার দরকার– এই বিষয়টার তাগিদ তিনি সবসময় দিয়েছেন। ভবিষ্যতের তরুণরা অনেক বেশি তাকে আঁকড়ে ধরবেন। তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হবেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

বারডেম হাসপাতালের হিমাগার থেকে ফ্রিজিং ভ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়ার পর সবার আগে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী। পরে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতারা, রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল, ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহু বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এর মধ্যে সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

/এমএম/এসএসএইচ/