পবিত্র রমজান মাসে তীব্র দাবদাহের মধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের দিয়ে বাধ্যতামূলক মঙ্গল শোভাযাত্রা করার নির্দেশনা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে অভিভাবকরা।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘সচেতন অভিভাবক মহল’ ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

অভিভাবকরা বলেন, চলমান পবিত্র রমজান মাসে বড়দের সাথে শিশু-কিশোররাও সিয়াম সাধনা করছে। একইসাথে দেশজুড়ে ভয়ঙ্কর লু-হাওয়া বিরাজ করছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। তীব্র দাবদাহের মধ্যে বাইরে বের হওয়া খুবই কষ্টকর।  তাই এ তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের সাবধানে থাকতে বলেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু আশ্চর্যকজনভাবে বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বা বাধ্যতামূলক মঙ্গল শোভাযাত্রা নামক র‌্যালি করতে বলেছে, যা খুবই দায়িত্বহীনতার পরিচয়।

তারা আরও বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের উপর রাষ্ট্রের সকল শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব অর্পিত। তারা কিভাবে এ রকম একটি দূর্যোগময় পরিবেশের মধ্যে শিক্ষার্থীদের র‌্যালি করতে বাধ্য করতে পারেন? তাও আবার রমজান মাসে? এটা স্পষ্ট জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের ১৯ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক, যা শিশু নির্যাতনের সামিল।

অভিভাবকরা বলেন, আমাদের সন্তানরা যদি এ গরমে মঙ্গল শোভাযাত্রায় নেমে অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে এর দায় কে নেবে? আমরা সচেতন অভিভাবক হিসেবে আমাদের শিশুদেরকে এ র‌্যালিতে বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ মেনে নিতে পারি না। আমরা গণমাধ্যম থেকে জানতে পারি যে- অতি সম্প্রতি সুপ্রিমকোর্টের একজন আইনজীবী মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতার আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। এছাড়াও ইতোপূর্বে ২০১৭ সালেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি মুসলিম শিশু কিশোরদের দিয়ে ভিন্ন ধর্মের অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হয়েছিল। ফলে সংবিধানের সুস্পষ্ট নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ ধরনের শিশু অধিকার পরিপন্থী প্রজ্ঞাপন আসতে পারে, তা আমাদের খুবই বিস্মিত করেছে।

মানববন্ধনে সচেতন অভিভাবক মহলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুহম্মদ জাইদুল ইসলাম, মুহম্মদ হাবীবুর রহমান, মুহম্মদ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

এমএইচএন/এনএফ