চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার বিটাক মোড়ে তরুণীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে দুই তরুণ নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মহিলা পরিষদ। একইসঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের যৌন নিপীড়ন, সহিংসতা বন্ধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার(৯ মে) সন্ধ্যায় মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী থানাধীন এলাকার বিটাক মোড়ে তরুণীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে দুই তরুণ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তপূর্বক দ্রুত গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছি।

জানা যায়, গত ১ মে সন্ধ্যায় দুই তরুণ মাসুম ও সবুজ বিটাক মোড়ে তাদের এক বান্ধবীর সাথে বসে গল্প করছিলো। ওই সময় স্থানীয় কিছু বখাটে গিয়ে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করলে দুই তরুণ এর প্রতিবাদ করায় বখাটেরা তাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ায়। একটু পর আরও কয়েকজন এসে তাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে বখাটেদের কয়েকজন দুই তরুণের শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তাদের দুজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

মহিলা পরিষদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং দ্বারা নারী ও কন্যাদের প্রতি যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণের ঘটনাসমূহ উদ্বেগজনকভাবে ঘটেই চলেছে। এ ধরনের ঘটনায় নারী ও কন্যাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ও স্বাধীন চলাচলে নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা তাদের শিক্ষাজীবনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে এবং তারা বাল্যবিবাহে ঝুঁকে পড়ায় দেশের চলমান অগ্রগতিতে নারী ও কন্যার অংশগ্রহণের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। অনেক সময় উত্ত্যক্তকরণের প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষক, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা বখাটেদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হচ্ছে এবং কখনো কখনো তাদের হত্যা করার মতো ঘটনা ঘটছে।

এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণ বন্ধে একটি পৃথক আইন তৈরি করার আহ্বান জানান তারা।

জেইউ/এমজে