র‌্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলন

গোবিন্দগঞ্জের বিস্ফোরণের সঙ্গে জঙ্গি বা নাশকতা পরিকল্পনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে উত্তরার র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেল চারটার দিকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে কাসেম মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে খায়রুজ্জামান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তে র‌্যাব নিশ্চিত হতে পেরেছে, এটি কোনোভাবেই জঙ্গি হামলা ছিল না। ওই ঘটনায় বাড়ির মালিক বোরহান উদ্দিন, একই গ্রামের অহেদুল মিয়া ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের রানা মিয়া নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে খায়রুজ্জামান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

খায়রুজ্জামানের জবানবন্দি ও সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ঘটনা সম্পর্কে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, কিছুদিন আগে বগুড়ার মোকামতলায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ভবনটির কেয়ারটেকার হিসেবে ছিলেন হাবিব। মাটি খননকালে সেখান থেকে মর্টার শেল উদ্ধার হয়। সেটি হাবিবের কাছ থেকে নিয়ে বোরহান ও খায়রুজ্জামান বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে সংরক্ষণ করেন। বিষয়টি সম্পর্কে মোট ৫ জন জানতেন।

গ্রেফতার খায়রুজ্জামান

একই এলাকার বাসিন্দা অহেদুল মিয়া। তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস, স্বর্ণ মুদ্রা ও ম্যাগনেট জাতীয় জিনিস বিক্রি করতেন বলে এলাকায় পরিচিতি আছে। অহেদুলই জানিয়েছিল, ওই রকেট সদৃশ বা মর্টার শেলটি অনেক মূল্যবান হতে পারে।

র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, নিহত রানা একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। কারিগরি জ্ঞান না থাকলেও বোরহান উদ্দিন, খায়রুজ্জামান ও রানা মর্টার শেলটি কাটার চেষ্টা করেন। এতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মর্টার শেলটি বিস্ফোরিত হয় এবং তাৎক্ষনিকভাবে তিনজন নিহত হন। হাবিব ও খায়রুজ্জামান দূরে থাকায় বেঁচে যান।

আশিক বিল্লাহ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে র‌্যাবের তদন্তে প্রতীয়মান হয় যে এটি জঙ্গি হামলা ছিল না। লাভের আশায় তারা এটি বিক্রি করতে চেয়েছিল। অর্জিত মুনাফা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল বলে জানিয়েছে গ্রেফতার খায়রুজ্জামান।

তিনি বলেন, গ্রেফতার খায়রুজ্জামান ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে আইনগত প্রক্রিয়ায় গোবিন্দগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হবে।

তিনি বলেন, ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হলেও র‌্যাব মূল ঘটনা স্পষ্ট করেছে। আমরা বলতে চাই, গোবিন্দগঞ্জে জঙ্গি হামলা বা নাশকতার কোনো আগাম তথ্য ছিল না। আর এতে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাও নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মর্টার শেলটি মাটির নিচে ছিল। এটি কোন দেশের তৈরি, কেমন ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল তা জানার চেষ্টা করতে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।

জেইউ/এমএইচএস