নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যদি পরিস্থিতি ডিমান্ড করে তাহলে আমরা আরও কঠোর হব। আমাদের একটাই ইচ্ছা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা।

সোমবার (২৯ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, গাজীপুরে নির্বাচনে কতটুকু কী হয়েছে জনগণ তার রায় দিয়ে দেবে। আমরা শুধু বলতে চাই, আগেও চেয়েছি ভবিষ্যতেও চাইব– যতগুলো নির্বাচন করব অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ যেন হয়। মানুষ যেন আসে এবং ভোট দিয়ে চলে যেতে পারে– এটাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। সব সিটি কেন, জাতীয় নির্বাচনেও আমরা একই নীতিতে থাকব। কঠোর এবং আরও কঠোর হব কি না এটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। পরিস্থিতি ডিমান্ড করলে আমরা আরও কঠোর হব। আমাদের একটাই ইচ্ছা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। যে নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারবে।

চার সিটিতে একপাক্ষিক ভোট হচ্ছে, এতে নির্বাচন কমিশনের তৃপ্তির জায়গা কতটুকু– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে কে আসবে, না আসবে এটা তাদের ব্যাপার। যিনি প্রার্থী হবেন বা হতে চান না, এটা একদমই তার নিজস্ব ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনের ওইভাবে কাউকে আনার সুযোগ নেই। আমরা অবশ্যই ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন পাব। কাজ করে আনন্দ পাব। না আসলেও নির্বাচন করতে হবে। এজন্য তো আমরা স্টপ হয়ে যেতে পারি না। এই কারণে আমাদের তৃপ্তি বা অতৃপ্তির সুযোগটা আসলে নেই। হলে আমরা অনেক খুশি হব। এখনো আহ্বান করি, যারা নির্বাচনে আসছেন না, তারা আসুক, নির্বাচন করুক। অসুবিধা তো নেই।

সিসি ক্যামেরা জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার হবে কি না– জানতে চাইতে চাইলে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা নিয়ে আমরা অনেকবার বলেছি। নতুন করে বলার কিছু নেই। সময় আসুক। সময় এলে আপনারা দেখতে পাবেন। এই মুহূর্তে আমরা এটা নিয়ে বসিনি। অন্য নির্বাচনগুলো নিয়ে এখন আমাদের মনোযোগ বেশি। এগুলো গেলে তারপর যখন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কাজ শুরু করব, তখন দেখব। অগ্রিম কিছু বলতে পারছি না।

জাতীয় নির্বাচনের আগে মডেল নির্বাচন বলছেন, সেখানে সিসি ক্যামেরা থাকবে কি না তা এখনো জানেন না, তাহলে এই নির্বাচনকে কীভাবে জাতীয় নির্বাচনে মডেল হিসেবে কাজে লাগাবেন– এমন প্রশ্নের জবাবে বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, প্রকৃতপক্ষে সিসি ক্যামেরা নতুন প্রযুক্তি, ইভিএম এসব নিয়ে ভোট করতে পারলে নির্বাচন খুব ভালো হতো। যারা ভোটের আয়োজন করছি তারা স্বস্তিতে থাকত। কারণ ইভিএমের ভোটটা অনেক দিক দিয়েই সহজ। জাল ভোট হয় না, সহিংসতা– এমন নানা দিক থেকে গণনা করা সহজ। অত টাইমও লাগে না। কিন্তু ইভিএমটা হয়নি, সেজন্য তো হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। সনাতন পদ্ধতিতে যেটা আগে থেকে হয়ে আসছে, এখন ইভিএমে না হলে আমরা পারব না, এটা তো বলতে পারব না। আমাদের এজন্য আইনে যা আছে ব্যালটে করা, এগুলো যেন আমরা আরও সুন্দরভাবে করতে পারি, সেজন্য আমরা পন্থা অবলম্বন করব। যতখানি মোটিভেশনাল কাজ করা দরকার, যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেগুলো আমরা নেব।

তিনি বলেন, ব্যালটে নির্বাচনটা কিন্তু হয়ে আসছে। কখনো হয়ত অনেকের পছন্দ হয়নি, কখনো হয়ত পছন্দ হয়েছে। যে বিষয়গুলোতে জনগণের কষ্ট হয় সেগুলো অবশ্যই আমরা নোটিশ করব। সে জায়গাগুলোতে ব্যাপক কাজ করে সুষ্ঠু নির্বাচন করার চেষ্টা করব।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা তো চেয়েছি, এখন না পেলে তো বলতে পারব না যে নির্বাচন করব না। ইভিএমও আমরা চেয়েছি। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতির কারণে হয়ে উঠেনি। এজন্য তো ভেঙে পড়লে চলবে না। মনোবল হারালেও চলবে না। আমাদের যা আছে, তার মধ্যেই যতটা ভালো করা যায় সে চেষ্টা করব। সিসি ক্যামেরা নিয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্তই নেই। তাই এটা নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না।

এসআর/এসএসএইচ/