হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি ও খেলাফত মজলিশের শায়খুল হাদিস মামুনুল হক বলেছেন, 'আজ ও আগামীকাল আমাদের কর্মসূচিতে যদি সন্ত্রাসী পেটোয়া বাহিনী হামলা করে বা বাধা দেয়; যদি সন্ত্রাসের ভয়াল রাজত্ব কায়েম রাখার চেষ্টা করে তবে গোটা বাংলাদেশে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে, তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আর এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।'

শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় বায়তুল মোকাররমে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে মামুনুল হক এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এসময় হেফাজতে ইসলামের ডাকা রোববারের (২৮ মার্চ) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

মামুনুল হক বলেন, 'চট্টগ্রামে গতকাল আমাদের চারজন ভাই শহীদ হয়েছেন। তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের পথে পথে হামলা করা হয়েছে। আমাদের আহত সন্তানরা চিকিৎসা পর্যন্ত পায়নি। যে কারণে আজ বিক্ষোভ হচ্ছে। আগামীকাল রোববার টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সারা বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হবে।'

তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন যে এমন বিষাদময়, দুঃখজনক হবে তা ভাবিনি। আমাদের সন্তানদের রক্তে মানচিত্র রক্তাক্ত হয়েছে। আমরা কেউ তা চাইনি। আমরা শুরু থেকেই নরেন্দ্র মোদিকে এনে সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে কলঙ্কিত না করার জন্য 
সরকারকে সতর্ক করেছিলাম। তাকে বাংলাদেশে আনতে নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু জানি না সরকার কোন দায়ে দায়বদ্ধ হয়ে তাকে আনলেন।'

মামুনুল বলেন, জনতার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, জনতা রাজপথে নেমে এলে হেলমেট বাহিনী আর পালানোর জায়গা খুঁজে পাবে না। তিনি বলেন, আমরা সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনের প্রতি সম্মান রেখে কোনো কর্মসূচি দেইনি। কিন্তু বিনিময়ে আমরা কী পেলাম? রক্ত আর লাশ। বাধ্য হয়ে হেফাজত আমির কর্মসূচি দিয়েছেন, রাজপথে নেমে এসেছেন। আগামীকাল যদি আবারও হেলমেট পেটোয়া বাহিনী এভাবে বাধা দেয়, সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করে তবে সারাদেশের সব শ্রেণির মানুষ রাজপথে নেমে আসবে।

দলের মহানগর সহ-সভাপতি আহমেদ আলী কাশেমী বলেন, 'এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। হরতালে বাধা দেওয়া হলে কাল থেকেই সরকার পতনের ডাক দেওয়া হবে।'

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মুফতি মাহফুজুল হক, মুফতি জসিম উদ্দিন, মুহিবুল্লাহ, মাওলানা হাসান জামিল প্রমুখ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে করা বিক্ষোভে হাটহাজারীসহ বিভিন্ন স্থানে ‍পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সংগঠনের নেতাকর্মীদের হতাহতের ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং রোববার (২৮ মার্চ) হরতালের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ ঘোষণা দেন।

জেইউ/জেডএস