গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যেদিন পরিবারসহ হত্যা করা হয়েছিল, সেদিন আওয়ামী লীগের দুর্ধর্ষ নেতারা কোথায় পালিয়ে ছিলেন? তখন একমাত্র কাদের সিদ্দিকীই প্রকাশ্যে প্রতিবাদে করেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন ‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের প্রিয় নেতারা যেমন আব্দুল মালেক উকিল কি বলেছিলেন? জালেমের হাত থেকে দেশ রক্ষা পেয়েছে। আমি তখন লন্ডনে। এ কথা শুনে অজান্তেই চোখের পানি ঝরছিল।’

শনিবার (২৭ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জনগণের ওপর নির্বিচারে পুলিশের গুলি ছোড়ার প্রতিবাদে সভাটির আয়োজন করা হয়।

জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা যাদের ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চেয়েছেন, সেই হেফাজতও আজ প্রতিবাদ করছে। আপনি স্মরণ করুন, ১৭ মার্চ। আপনার মহান পিতার জন্মদিবস। সেদিন আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় শাল্লাতে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করা হয়। আসলে তারা সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করেনি, আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা বুঝিয়েছে, মোদিকে আমন্ত্রণ একটি ভুল কাজ।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আজকে আপনি সবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন। এমনকি আপনার বোন শেখ রেহানা থেকেও। এখন যদি আপনার প্রস্থানের সময় হয়, তখন কে আপনার পাশে দাঁড়াবেন? হয়ত শেখ রেহানাই থাকবেন।’

পুলিশের উদ্দেশ্যে জাফরুল্লাহ বলেন, পুলিশ ভাইদের কাজ হলো শান্তি রক্ষা করা। আমাদের সমাবেশে উগ্র জনতা নেই। তাই আপনারাও শৃঙ্খলা মেনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকেন। আপনারা এখান থেকে কাউকে ধরে নিয়ে যাবেন না। প্রতিবাদ করা আমাদের মৌলিক অধিকার।

সমাবেশে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, স্বাধীনতার এই উৎসবকে মোদি এবং সরকারি দলের উৎসবে পরিণত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শহীদদের বড় ধরনের অসম্মান করা হয়েছে। সরকার বাইতুল মোকারম ও চট্টগ্রামে এই ২৬ মার্চে রক্ত ঝরিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গতকাল নরেন্দ্র মোদি অনেক কথা বললেন, অনেক প্রশংসা করলেন। কিন্তু তিস্তার পানির বিষয়ে কোনো কথা নেই। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে কি-না এমন কোনো কথাও নেই।

সমাবেশ ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, সরকার তাদের সুপ্রিয় উগ্র-সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদিকে খুশি করতে গতকাল ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ লীগ দিয়ে বায়তুল মোকাররমে তাণ্ডব চালিয়েছে। এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে অতর্কিতভাবে ঘুমন্ত জাতির ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২৬ মার্চ এই সরকার আমাদের ওপরে সেই গণহত্যার শামিল একটি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

এমএইচএন/এমএইচএস