স্ত্রীকে হত্যার পর দুর্ঘটনার নাটক সাজান স্বামী!
অভিযুক্ত সাকিবুল আলম
রাজধানীতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে সাকিবুল আলম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (৩ এপ্রিল) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামকে) হাসপাতাল থেকে তাকে আটক করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, নিহত ঝিলিক আলমের (২৩) পা, মাথা ও গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হলে যে ধরনের লক্ষণ দেখা যায়, এখানেও সে ধরনের লক্ষণ আছে।
বিজ্ঞাপন
নিহতের ছোট ভাই জাবের হোসেন খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পারিবারিকভাবে আমার বোনের বিয়ে হয়। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। গত বৃহস্পতিবার বিকালে আমার বোনকে নতুন মোবাইল কিনব বলে জানাই। তখন সে দুলাভাইকে সঙ্গে নিয়ে মোবাইল কেনার পরামর্শ দেয়। এ জন্য শুক্রবার দুলাভাই ও বোনকে একাধিকার কল দিলেও তারা কেউ ধরেননি। আজ (শনিবার) সকালে ৮টার দিকে দুলাভাই আম্মুকে ফোন দিয়ে বলেন আপনার মেয়ে মারা গেছে বাড্ডা জেনারেল হাসপাতালে আছি। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে তাদের খোঁজে পাইনি। এরপর আবার কল দিয়ে বলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে আইসিইউতে মারা গেছে। ভিন্ন তথ্য দেওয়ায় বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয়।
জাবের হোসেন বলেন, সাকিব ইচ্ছা করে গাড়ি ফুটপাতে উঠিয়ে দিয়ে বলছে আমার বোন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি দেখলেই বুঝা যাবে এটা হত্যা।
বিজ্ঞাপন
গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ঢাকা আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব জানিয়েছেন, তাদের বাসা গুলশান ২ নম্বর সড়কের ৩৬ নম্বর রোডে। বাসা থেকে প্রাইভেটকার নিয়ে স্বামী-স্ত্রী বের হন। হাতিরঝিল আমবাগান এলাকায় রাস্তায় আইল্যান্ডের ওপর গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা খেলে তিনি ডান হাতে সামান্য আঘাত পান এবং গাড়িতে থাকা তার স্ত্রী ঝিলিক আলম (২৩) গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতাল নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সকাল সোয়া ১১টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বামীর আচরণ রহস্যজনক হওয়ায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। খোঁজ নেয় তার গুলশানের বাসায়। এরপর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, ঝিলিককে বাসা থেকেই অচেতন অবস্থায় বের করা হয়। এরপর সাকিবকে আটক করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহিউদ্দিন জানান, ঘটনাটি রহস্যজনক। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে গুলশান থেকে মৃত অবস্থায়ই ঝিলিককে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। সাকিব ঘটনাটি আড়াল করছেন। বিষয়টি গুলশান থানার ওসিকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে গুলশান থানা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এসকেডি