সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ( ৬ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মানুষের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়নি। বড় বড় বিপণিবিতান বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে অন্য সব দোকানপাট।

এদিকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও রিকশা চলছে অবাধে। মোহাম্মদপুরের বাসস্ট্যান্ডে লেগে থাকছে যানজট।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকালে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, সলিমুল্লাহ রোড, কৃষি মার্কেট, টাউনহল,হুমায়ুন রোড, গজনবী রোড, কাদেরিয়া মাদরাসা রোড, আসাদ এভিনিউ, জেনেভা ক্যাম্প, কাটাসুর রোড, রায়েরবাজার, চার রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

মোটরসাইকেলে  দুইজন যাত্রী বহন করলেই মামলা দিচ্ছে পুলিশ

টাউনহল বাজারে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। বাজার করতে আসা মো. নাজিবুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, সরকার যতই লকডাউন দিক না কেন প্রয়োজন অপ্রয়োজনে মানুষ বাসা থেকে বের হবেই। তবে নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সবাইকে আরও সচেতন হওয়া উচিত।

কৃষি মার্কেট এলাকায় দোকান খোলা রেখেছেন দর্জি সোহাগ। সরকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও কেন খোলা রাখছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হাতে অনেক কাজ জমা আছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ ডেলিভারি দিতে হবে। তাই বাধ্য হয়েই দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে। তবে পুলিশ দেখলে আবার বন্ধ করে ফেলি।

বড় বিপণিবিতান বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে অন্য দোকানপাট

তাজমহল রোডে আঁখি নূর অপটিকসের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আশেপাশের সব দোকানই খোলা। তাই মালিক আমাদের খুলতে বলেছে।

মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মার্কেটের পাশের সড়কে দোকান বসিয়েছেন হকাররা। ভ্যানে প্যান্ট বিক্রয় করছেন হকার আমিনুর। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গরিব মানুষ পেটের দায়ে দোকান খুলেছি। আপনারা চলে যেতে বললে চলে যাব। সরকার তো আমাদের কথা চিন্তা না করেই লকডাউন দিয়ে দিল।

এদিকে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন রাস্তায় যানবাহনের তীব্র চাপ ছিল আজ। মোটরসাইকেলে দুজন পেলেই মামলা দিচ্ছে পুলিশ। এতে সকালে অফিসগামী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন

খোলা রয়েছে মোহাম্মদপুরের ফুটপাথের ফলের দোকান

বেসরকারি চাকরিজীবী মো. রায়হানকে দুজন পরিবহনের দায়ে মামলা দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তিনি বলেন, প্রতিদিন আমি আর আমার এক সহকর্মী মোটরসাইকেলে করে কারওয়ান বাজারে অফিসে যাই। আজ বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ সিগন্যাল দিলে আমি থামি। পরে আমার কাগজ নিয়ে দুই হাজার টাকার মামলা দিয়ে দেয়। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের ওই সদস্য বলেন, লকডাউন চলাকালে মোটরসাইকেলে দুজন যাতায়াত করা নিষেধ। এ জন্য মামলা দিয়েছি। একদিকে গণপরিবহন বন্ধ, অন্যদিকে অফিস খোলা এ অবস্থায় কীভাবে চাকরি বাঁচাবো বুঝতে পারছি না।

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার চিত্র

এ বিষয়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. তোসাদ্দেক বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনা পালন করছি। এর বাইরে কিছু নয়। 

দোকান-পাট খোলা ও মানুষের অবাধ চলাফেরার বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন্স) মো. দুলাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোহাম্মদপুরে আমাদের ৮টি টিম কাজ করছে। এমন হওয়ার কথা নয়। তারপরও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এসকেডি