ডাক্তার দেখিয়ে স্ত্রী ও তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে রিকশাযোগে মোহাম্মদপুরের বাসায় ফিরছিলেন ইমরান রেজা (৩৮)। ইকবাল রোডের একপাশ ধরে এগোচ্ছিল তাদের রিকশাটি। হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে এসে তাদের রিকশাটির ওপর তুলে দেয় একটি প্রাইভেটকার। এরপর প্রাইভেটকারটি রিকশাটিকে ওই গতিতেই কয়েক হাত পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। এতে রিকশাটি পুরোপুরি চুর্ণ-বিচূর্ণ হয় এবং রিকশায় থাকা সবাই গুরুতর আহত হন। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ দুর্ঘটনার একটি ৫১ সেকেন্ডের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিল ১৫ বছরের এক কিশোর। তার পাশে বসে ছিল সালমান (২৪) নামের আরেক তরুণ। দুর্ঘটনার পর তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা। বর্তমানে ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর ওই কিশোরকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

আহত আফরোজার বড় বোন দিনা বলেন, আফরোজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। তার স্বামী ইমরান পেশায় একজন প্রকৌশলী। তারা মোহাম্মদপুরে থাকেন। তাদের সাত বছর ও তিন বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে। বর্তমানে আমার বোন জামাই শ্যামলী ট্রমা সেন্টার এবং আমার বোন ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আমার ভাগনির তেমন কিছু হয়নি। সে বর্তমানে বাসায় আছে।

তিনি বলেন, আফরোজার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। আগামীকাল (বুধবার) তার মেরুদণ্ড ও পায়ে অস্ত্রোপচার করা হবে।

এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, সালমানের বাসা মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে। কিশোরটির বাসা মোহাম্মদপুরের শের শাহ শূরি রোডে। ঘটনার দিন গাড়িটি চালাচ্ছিল ওই কিশোর। তাকে গাড়ি চালাতে দিয়েছিলেন সালমান। 

এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত সুজিত কুমার সাহা জানান, দুর্ঘটনার পর স্থানীয় জনতা এক কিশোর এবং সালমান নামের এক তরুণকে আটক করে। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন আহত ইমরানের বাবা রফিকুল ইসলাম। 

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে জানান, এই দুর্ঘটনার পর পর গাড়িতে থাকা তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর গাড়ি চালানো ওই কিশোরকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তার তরুণ এখন কারাগারে রয়েছে।

এমএসি/এসএএ/কেএ