লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হোক, লিখলেন মানুষের আচরণে ক্ষুব্ধ চিকিৎসক
৬ এপ্রিল বরিশালের চকবাজারে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ, একই ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে ঢাকাতেও
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারের তরফ থেকে মাস্ক পরা, বারবার হাত ধোওয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেসব বিষয়ে মানুষ উদাসীন থেকেই গেছে বরাবরই। সবশেষ গেল সোমবার থেকে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কথা বললেও ‘লকডাউন’ দেখা গেছে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাটে, চায়ের দোকানে দেখা গেছে মানুষের জটলা।
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গণপরিবহন চলাচল, রাইড শেয়ারিং অ্যাপ বন্ধ ও শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও এসব নির্দেশনার বিরুদ্ধে বড় জমায়েত করে বিক্ষোভও করেছে মানুষ। এ ব্যাপারটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের খেদ প্রকাশ করেছেন মারুফ হাসান অভি নামে একজন চিকিৎসক। অনেকটা অভিমানের ভাষায় তিনি লিখেছেন, জনগণের চাহিদা মোতাবেক লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হোক।
বিজ্ঞাপন
মারুফ তার স্ট্যাটাসে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হোক লিখলেও আসলেও তিনি মানুষের কাছে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সব বিধিনিষেধ মেনে চলার আকুতি জানিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই নিজেদের জীবন বাজি রেখে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এ সেবা দিতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে জীবনও দিয়েছেন বহু চিকিৎসক। সেই চিকিৎসকরাই যখন দেখছেন স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের অনীহা, তখন তাদের মনের অবস্থা কেমন হতে পারে, সেটিই উঠে এসেছে মারুফের স্ট্যাটাসে।
বিজ্ঞাপন
স্ট্যাটাসে তিনি যেমন লিখেছেন লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হোক, তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন একটি ‘কিন্তু।’এই কিন্তুতেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই যে ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার এত কিছু করছে, চিকিৎসকরা নির্ঘুম রাত-দিন এক করে ফেলছেন, নার্স এবং অন্যান্য স্টাফরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, প্রশাসন বা পুলিশ সদস্যরা এতটা শ্রম দিচ্ছেন, বিধিনিষেধ মানতে সাধারণ মানুষের এই অনীহার পর সেসবের মূল্য থাকে কোথায়?
স্ট্যাটাসে মারুফ লিখেছেন, জনগণের চাহিদা মোতাবেক লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হোক। সেই সঙ্গে, সরকারি সকল হাসপাতালে ফ্রি কোভিড ১৯ চিকিৎসা বন্ধ করা হোক, অ্যান্টিবায়োটিক, হেপারিনসহ সব ওষুধের জন্য বাজার দরে চার্জ করা হোক, হাসপাতালের তিনবেলা খাবার, দুইবেলা নাস্তার ডায়েট বিল করা হোক, চিকিৎসকদের ভিজিটসহ সকল সেবার চার্জ প্রযোজ্য হবে, অক্সিজেনের জন্য ঘণ্টা বা মিনিট হিসাবে চার্জ করা হোক।
এসব কথা লিখলেও এই চিকিৎসক আসলে মোটেও তা চান না। বরং স্বাস্থ্যবিধি মানতে সাধারণ মানুষের যে অনীহা রয়েছে, তার বিরুদ্ধেই আওয়াজ তুলেছেন তিনি।
মহামারির এই সময়ে যারা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না তাদের সম্ভাব্য খুনি বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
এনএফ