কবি মোহন রায়হানের মা মাহমুদা খাতুন

কবি মোহন রায়হানের মা মাহমুদা খাতুনের মৃত্যুর খবর শুনে মারা গেছেন তারই ছোট বোন সেলিনা খাতুন। কিছু সময়ের ব্যবধানে দুই খালাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ কালের কণ্ঠের সাংবাদিক তৈমুর ফারুক তুষার।

তৈমুর ফারুক তুষার বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড় খালা মাহমুদা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আজ (১৭ এপ্রিল) শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আইসিইউ পাওয়া যায়নি। বিকেল সাড়ে ৩টায় তিনি মারা যান।

তিনি আরও বলেন, ‘আজই বড় খালার সিরাজগঞ্জের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন ছোট খালা। সন্ধ্যার দিকে বড় খালার মৃত্যুর খবর শুনে পথেই তার মৃত্যু হয়। এখন বড় খালার মরদেহ নিয়ে সিরাজগঞ্জের দিকে যাচ্ছি।’

ছবির ডানে সেলিনা খাতুন

গত ৩ এপ্রিল মাহমুদা খাতুনের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। সংকটজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গতকাল (১৬ এপ্রিল) তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, অসুস্থতার কারণে তার খাবার খেতে অসুবিধা হচ্ছিল।

মায়ের জন্য আইসিইউ শয্যা পেলেন না মোহন রায়হান

ঢামেকের আইসিইউতে কোনো শয্যা পাওয়া যায়নি বলে মাহমুদা খাতুনকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ছেলে মোহন রায়হান। দুপুরে ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন, ‘আমার মাকে কি আমি বাঁচাতে পারব না? আমার মা মাহমুদা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে নয়, আছেন পিসিইউতে। তার অক্সিজেনের মাত্রা ৬৫-৭০ এ ওঠা-নামা করছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখনই আইসিইউতে না নিলে আমার মাকে বাঁচানো যাবে না। অনেক চেষ্টা করেও তার জন্য আইসিইউর ব্যবস্থা করতে পারিনি। আমার মা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন, শ্বাস নিতে পারছেন না। আমার জীবনের বিনিময়ে কেউ কি আমার মাকে একটি আইসিইউ বেড দিতে পারেন?’

সিরাজগঞ্জের খোকসাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বড় ছেলে প্রয়াত মাহমুদ আলম মধু ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে রৌমারী ক্যাম্প কমান্ডার ও স্বর্ণপদকজয়ী জাতীয় ক্রীড়াবিদ। তার দ্বিতীয় ছেলে কবি মোহন রায়হান। মাহমুদা খাতুন পাঁচ ছেলে ও তিন কন্যার জননী।

সিরাজগঞ্জ দিয়ারপাচিল ঈদগাহ মাঠে রাত ১০টায় মরহুমার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা শেষে খলিসাকুড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

পিএসডি/এমএইচএস