রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় হাজী মুসা ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বংশাল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাতে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন অফিসার ইনচার্জ শাহীন ফকির।

বংশাল থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, অবহেলাজনিত মৃত্যু এবং অবৈধভাবে রাসায়নিক দ্রব্য রাখার দায়ে ভবন মালিক ও গোডাউন মালিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছে।  বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে অপেক্ষা করেছিলাম যে, অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা মামলা করে কি না। কিন্তু স্বজনরা মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। চারজন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়ে ঘটনাটি বড় আকার ধারণ করায় পুলিশ বাদী হয়ে রাত ৯টার দিকে মামলাটি করে। মামলায় আসামিরা হলেন ভবনের মালিক মোস্তাক আহমেদ এবং কেমিক্যাল গোডাউনের মালিকরা।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানশনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় হাজী মুসা ম্যানশনে লাগা আগুন শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। আরেকজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

তিনি জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ভাস্কর দেবনাথ, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও বিস্ফোরক পরিদফতরের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলগালা করা হয় হাজী মুসা ম্যানশন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ভবনটি সিলগালা থাকবে।

এর আগে সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান, এটি অপরিকল্পিত কেমিক্যাল মার্কেট। এই ভবনে আমরা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে পাইনি। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ১০-১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। এ ঘটনায় আমাদের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন আরমানিটোলা খেলার মাঠের পাশে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের খবর পাই রাত ৩টা ১৮ মিনিটে।

প্রথমে ছয়টি ও পরে ভয়াবহতা বেড়ে গেলে আরও চারটিসহ মোট ১০টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আরও বাড়িয়ে ১৯টি করা হয়। তারা ভবনের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এছাড়া বাড়ির ছাদে আটকাপড়া লোকজনকে উদ্ধারে ল্যাডার ইউনিটও যুক্ত করা হয়।

এমএসি/আরএইচ