মার্কেট খোলার দিনে সড়কে বেড়েছে গাড়ি
সড়কে গাড়ির চাপের কারণে ১০-১৫ মিনিট থামতে হচ্ছে সিগন্যালে/ ছবি : ঢাকা পোস্ট
করোনাভাইরাসের লাগাম টেনে ধরতে দেশব্যাপী চলছে সরকার আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই রোববার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে সারাদেশে খুলে দেওয়া হয়েছে দোকানপাট-শপিংমল। এর প্রভাব পড়েছে সড়কে। সকাল থেকে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহনের বাড়তি চাপ লক্ষ্য করা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও মানুষের মধ্যে উদাসীনতা ছিল লক্ষণীয়।
রোববার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর, ধানমন্ডি, বিজয় সরণি, মহাখালী, বনানীর সড়ক ঘুরে দেখা যায়, বিধিনিষেধের অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ সড়কে মানুষ ও গাড়ির বাড়তি চাপ রয়েছে। কোথাও কোথাও ট্রাফিক সিগন্যালে গাড়িগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১০-১৫ মিনিট। সিগন্যাল ছাড়া অন্যান্য জায়গায়ও ছোট ছোট যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে বিজয় সরণি সিগন্যালে দেখা যায়, তপ্ত রোদে কাজ করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। এক লেন ছেড়ে দিলে চাপের কারণে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বাকি তিন লেনের গাড়ি।
সেখানে কথা হয় ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আজমীরের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের মধ্যে আজই বেশি গাড়ির চাপ। এর কারণ হতে পারে, লকডাউন খুলে যাওয়ার ঘোষণা আসছে, যারা গ্রামে গেছেন তারা নানাভাবে আবার ফিরে আসছেন। মার্কেট খুলেছে সকাল থেকে, সেটাও অন্যতম কারণ। মার্কেটমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। সঙ্গে একটা বাড়তি কারণ হচ্ছে, রাজধানীর অনেক জায়গায় সিটি করপোরেশন পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ইউলুপ চালু করেছে। যেমন তেজগাঁও লাভ রোডে নতুন ইউলুপ চালু করার কারণে বিজয় সরণিতে চাপ পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মুভমেন্ট পাস চেক করা কঠিন হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে একটা চেকপোস্ট আছে। সেখানে অপ্রয়োজনে বের হয়েছে বা সন্দেহভাজন গাড়ি চেক করা হচ্ছে। মুভমেন্ট পাস না থাকলে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা হচ্ছে।
মিরপুরে গত কয়েকদিন কড়াকড়ি দেখা গেলেও আজ তা নেই বললেই চলে। রাস্তায় জরুরি কাজে বের হওয়া এবং অফিসগামীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা জরুরি কাজে অথবা অফিস যাওয়ার জন্য রাস্তায় বিধিনিষেধের সব নিয়ম মেনেই বের হয়েছেন। কিন্তু রাস্তায় অনেক মানুষ বের হয়েছেন, যাদের কোনো জরুরি কাজ কিংবা অফিস নেই। তারা রাস্তায় বের হয়ে বিধিনিষেধের কোনো তোয়াক্কা করছেন না।
অন্যদিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার প্রগতি সরণিতে সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তর বাড্ডা ও প্রগতি সরণির রাস্তায় সকাল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা ও প্রাইভেটকারের সংখ্যা বেশি। এছাড়া রাস্তার ফুটপাত ও অলি-গলিতে মানুষের উপস্থিতিও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। পুলিশ চেকপোস্টগুলোতেও মুভমেন্ট পাস দেখা হচ্ছে না খুব একটা।
তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাহেদ আল মাসুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সকাল থেকে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। তেজগাঁও লাভ রোড সিগন্যাল পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। পাশাপাশি দূরত্বে দুটি ইউলুপ চালু করেছে। কিন্তু ইউলুপ গাড়ির চাপ নিতে পারছে না। আমরা চেষ্টা করছি, এটা সামাল দিতে। গাড়ির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সব গাড়ি চেক করা এবং মুভমেন্ট পাস আছে কি-না তা দেখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
গুলশান ট্রাফিকের ডিসি বলেন, ক্রাইম ডিভিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিবহনে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কি না তা দেখা হচ্ছে। চেকপোস্ট পরিচালনা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ যানবাহন বেড়েছে, কেন বেড়েছে সেটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমরা সমন্বয়ের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি চেকপোস্ট পরিচালনা করতে গিয়ে যেন এই রমজানে জনভোগান্তি তৈরি না হয় সেটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
জেইউ/এফআর/জেএস