করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় তৃতীয় সপ্তাহের মতো সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ চলমান রয়েছে। যদিও করোনা পরিস্থিতি আমলে নিয়েই নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত ১১ এপ্রিলের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও কয়েকটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সহসাই কোনো ভোট করবে না নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা ও মেয়াদ শেষ হওয়া নির্বাচনগুলো ঈদের পর করার কোনো পরিকল্পনা নেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির। সেক্ষেত্রে বর্তমান চেয়ারম্যানদের মেয়াদ শেষ হলেও ভোট না হওয়া পর্যন্ত তারা স্বপদে বহাল থাকবেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হলেও ব্যবসায়ীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ শিথিলতা এনে দোকানপাট খুলে দিয়েছে সরকার। এ অবস্থায় নির্বাচন নিয়ে আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই ইসির। জাতীয় সংসদের চারটি নির্বাচন ছাড়া যে নির্বাচনগুলো আছে, সবগুলোই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। তাই সরকারের সিদ্ধান্তের পর আলোচনা করে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে এ ঈদের পরপরই ভোট করার কোনো পরিকল্পনা নেই। ইতোমধ্যে করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় দৈব-দুর্বিপাকজনিত কারণে ভোট পিছিয়ে দিয়েছে ইসি। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে বলেছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বরতদের দায়িত্ব পালন করার জন্য সুযোগ দিয়েছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভোট করার জন্য সরকারের অন্যান্য দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজন হয়। তারাই ভোটগ্রহণে দায়িত্ব পালন করে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে তাদের নির্বাচনের কাজে লাগানো যাবে না। তাই সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে সরকারের অবস্থান ও পরিস্থিতির উন্নতির ওপর।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় গত ১ এপ্রিল সব নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় ইসি। বর্তমানে দোকানপাট খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়ের ওপর তো আসলে নির্বাচন নির্ভর করে না। নির্বাচন মানেই জনসংযোগের বিষয় সামনে চলে আসে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত আসবে নির্বাচনের।

তিনি বলেন, এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দীর্ঘদিন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হয়নি। এতে আইনের তেমন কোনে বাধ্যবাধকতা নেই। সে সময় চেয়ারম্যানরা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘ কয়েক বছর ভোট ছাড়া দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার পরিস্থিতির কারণে ভোট পিছিয়েছে। তাই বর্তমান চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব পালন করবেন।

এসআর/এসএসএইচ