ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিপনিবিতান-দোকানপাট খুলেছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে বিধিনিষেধের মধ্যেই জাল টাকা তৈরির কাজ করছে প্রতারক চক্র। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে এমন একটি জাল টাকার মিনি কারখানার সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে নারীসহ চারজনকে। যাদের মধ্যে রয়েছেন দুজন ইঞ্জিনিয়ার।

ডিএমপির গুলশান গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) বলছে, রোববার (২ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এক নারীসহ দলের চার সদস্যকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে আটক করা হয়েছে।

যারা ঘরেই স্থাপন করেছিলেন জাল টাকার মিনি কারখানা। যেখানে জাল টাকা তৈরির কারখানা বানিয়েছিলেন জীবন ও তার দলের সদস্যরা। জাল টাকা কারবারের ওই দলটির দুজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। দীর্ঘসময় খ্যাতনামা টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কাজ করতেন একজন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গুলশান গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রেফতারদের হেফাজত থেকে জব্দ করা হয়েছে তৈরি করা ৪৬ লাখ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির বিপুল সামগ্রী।

মশিউর রহমান বলেন, চক্রটি প্রথমদিকে সাভারের জ্ঞানদা এলাকায় জাল টাকা তৈরি করত। ঈদকে কেন্দ্র করে তারা কামরাঙ্গীরচরে জাল টাকা তৈরির ব্যবসা শুরু করে গত তিনমাস ধরে। চক্রটির দলনেতা জীবন। এর আগেও জাল টাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তার একাধিকবার জেল হয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে সে আবার জাল টাকা বানানোর কাজ শুরু করে। জীবনকে বেশ কিছুদিন ধরে পুলিশ অনুসরণ করছিল। অবশেষে সে ধরা পড়ে।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পিয়াস ও ইমাম হোসেন বরিশাল পলিটেকনিক থেকে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে ডিপ্লোমা করেছেন। ইমাম নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। অপর আসামি পিয়াস বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে পাওয়ারের ওপর ডিপ্লোমা করেন। বেশি টাকা পাওয়ার লোভে ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে জাল টাকা তৈরির অবৈধ কাজে জড়িয়ে যান দুজনই।

ডিসি মশিউর বলেন, গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, হিট মেশিন, বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন, ডাইস, জাল টাকার নিরাপত্তা সুতা, বিভিন্ন ধরনের কালি, আঠা এবং স্কেল কাটারসহ আরও সামগ্রী। যা দিয়ে আরও অন্তত দেড় কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব হতো।

তাদের তৈরি জাল টাকার উন্নত কোয়ালিটি

এই দুই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি জাল টাকার কোয়ালিটি যথেষ্ট উন্নত। আসন্ন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাকে লক্ষ্য করে জাল টাকা তৈরি করার বড় ধরনের পরিকল্পনা ছিল তাদের। খালি চোখে দেখে বোঝারই উপায় নেই এগুলো জাল।

আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ডিসি মশিউর রহমান।

জেইউ/জেডএস