কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাড়তি রাজস্ব অর্জন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেশবাসীকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে তামাকের মূল্য বৃদ্ধির দাবি তুলে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সংসদ সদস্যরা।

মঙ্গলবার (৪ মে) আসন্ন ২০২১-২২ বাজেটে সিগারেটের স্তরভিত্তিক করকাঠামো বাতিল করে ও সকল স্তরের সিগারেটে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে দাম বাড়ানোর দাবি জানান সংসদ সদস্যরা। অনলাইনে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ আয়োজিত ‘আসন্ন জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপ : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

আলোচনায় ডেপুটি স্পিকার জনাব ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, ‘আপনারা মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ডিও লেটার দিয়েছেন। শুধু এতেই কাজ হবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং ফোরামের সবাই যদি যৌথভাবে অর্থমন্ত্রীকে বুঝাতে পারেন, তাহলে ভালো হয়। তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু এড়িয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। তাকে বলতে হবে, প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্টকে আপনি সমর্থন করেন কি না। আপনারা অর্থমন্ত্রীর সাথে কথা বলুন। তাহলে আপনারা সফল হবেন। তামাকের ওপর আপনাদের সুনির্দিষ্ট করারোপের এই উদ্যোগ সফল হোক।’

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করছি। বাংলাদেশের অনেক সংস্থা তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করছে। যারা তামাক উৎপাদন ও ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা শক্তিশালী গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধে কাজ করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হবে। বাজেটে তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি করলে এর ব্যবহার কিছুটা কমবে।’

এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর মূল্য বৃদ্ধি করে তামাক নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এটি কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে জরিপ করা দরকার। ট্যারিফ ও ট্যাক্স বৃদ্ধির মাধ্যমে কতটা সুফল আমরা পাচ্ছি, তার কোনো জরিপ আমরা এখনও করতে পারিনি। আপনারা যারা তামাক নিয়ে কাজ করেন তারা এই মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে কতটা ফল আসছে, সে বিষয়ে গবেষণা করতে পারেন। এগুলো তামাকের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আরও কাজ করতে উৎসাহিত করবে।’

বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং সভাপতি ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘‘আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে বাজেটে তামাকের কর কাঠামো শক্তিশালী ও কর বৃদ্ধির সুপারিশ জানিয়ে ৫২ জন সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন।’’ 

এমএইচএন/এইচকে