বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সমাবেশ

ভোলায় দুই ভাইকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। একইসঙ্গে তারা ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রেখা রাণীকে পিটিয়ে হত্যা, বিভিন্ন স্থানে জমি দখল, মারধর, ধর্ষণ এবং ভারতের পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন পরবর্তী হিন্দুদের বাড়ি ঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, লুঠপাট বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানান।

শুক্রবার (৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, করোনা দুর্যোগের মধ্যেও দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বস্তি নেই। ভোলায় তপন সরকার ও দুলাল সরকার নিজেদের জমি বিক্রির টাকা চাওয়ায় তাদের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ভূমি দস্যুরা। পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে শৈলকূপার রেখা রাণীকে। জমি দখলে বাধা দেওয়ায় লালমনিরহাটে হারাধন রায় ও তার স্ত্রী স্মৃতিরাণীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। শরিয়তপুরে মিলন মন্ডল, নোয়াখালীর হাতিয়ায় কেশব বাবু, সুবর্ণ চরে উৎপল মজুমদার, বগুড়ায় নিখিল চন্দ্র বর্মন, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৩ সন্তানের জননীকে ধর্ষণ, নবকরুণাপুর বন বিহার ভাংচুর ও ভাতিজাসহ চারজনকে পিটিয়ে জখম, ঝালকাঠিতে পানের বরজ পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছে।

এছাড়াও শরিয়তপুরের অপু চন্দ্র ও শিশির চন্দ্রের বাড়িতে ও মন্দিরে চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি অন্যথায় ভারত চলে যাওয়ার হুমকি, কক্সবাজারে ঈদগাও এলাকায় হামলা ও ৩০ জনকে আহত, সিরাজগঞ্জে মন্দিরের জায়গা দখল করে টয়লেট স্থাপন, কুমিল্লায় ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় পিতা আহত, ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরে মন্দিরে হামলা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ, বোয়ালমারীতে শ্মশানের জায়গা দখল করে প্রাচীর নির্মাণসহ শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার আসামিদের মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার দাবি করছি আমরা।

তারা আরও বলেন, সম্প্রতি ভারতের পশ্চিম বাংলায় নির্বাচন পরবর্তী হিন্দুদের শত শত বাড়ি ঘরে হামলা, মন্দির ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ, লুঠপাট ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় হাজার হাজার মানুষ পার্শ্ববর্তী আসাম রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় কোনো বিবেকবান মানুষ প্রতিবাদ না করে পারে না। এক সময় এই মানুষগুলো একটু শান্তিতে বাস করতে এদেশ ছেড়ে ভারতে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানেও স্বস্তি নেই।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাড. দীনবন্ধু রায়, সহ সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী জয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব সুজন দে, অ্যাড. লাকি বাড় আন্তর্জাতিক সম্পাদক নরেশ হালদার, মহিলা বিষয়ক অ্যাড. প্রতিভা বাকচী প্রকাশনা সম্পাদক সাগরিকা মন্ডল, হিন্দু মহিলা মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক মুক্তা বিশ্বাস, হিন্দু স্বেচ্ছাসেবক মহাজোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাপস বৈরাগী প্রমুখ।

এমএইচএন/এমএইচএস