নতুন রোগী ভর্তি চোখে পড়ে না ঢামেকের করোনা ইউনিটে
এই তো বেশ কিছুদিন আগেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাসের রোগীর চাপ ছিল বেশ। করোনা ইউনিটের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের জটলা লেগে যেত। স্বজনদের ছুটোছুটি আর আহাজারিতে ভারী হত হাসপাতালের পরিবেশ।
তবে এখন রোগীর চাপ কমেছে। দেশে গত কয়েকদিন ধরে কমেছে আক্রান্ত ও শনাক্তের সংখ্যা। ফলে দৃশ্য পাল্টে গেছে। এখন আর চিকিৎসক-নার্সদের কর্মব্যস্ততা নেই। নেই রোগীর চাপ সামলানোর ব্যস্ততা। নেই রোগীর সিরিয়াল। শয্যার অভাবে এখান থেকে ফিরে যেতে হয় না করোনা রোগীকে। দিন দিন শয্যা ফাঁকার সংখ্যা বাড়ছে ঢামেকের করোনা ইউনিটে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১০ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের সামনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। আর এমন তথ্যও মিলেছে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিনিয়ত করোনা রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। আগের মতো কোনো চাপ নেই এখানে। আগে আমাদের রোগীর চিকিৎসা দিতে দিতে হিমশিম খেতে হতো। রোগীর চাপ সামলাতে সামলাতে সবাই নাজেহাল হয়ে যেতাম। আমাদের কাজ সেবা করা। রোগী বেশি থাকলেও আমাদের সেবা দিতে হবে, আবার কম থাকলেও দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
ঢামেকের করোনা ইউনিটের এ চিকিৎসক আরও বলেন, ভালো সংবাদ এই যে, দেশে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিকের বেশি ছিল। এখন মৃত্যুর সংখ্যাও যেমন কমেছে, তেমনি শনাক্তের সংখ্যাও কমেছে। এটি একটি ভাল সংবাদ।
তিনি বলেন, সংক্রমণ কমেছে বলে স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না তা ঠিক নয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে। ভারতের ভ্যারিয়েন্টও আমাদের দেশে শনাক্ত হয়েছে। সচেতন এবং সাবধান থাকলেই এ সংক্রমণ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
ডিউটিরত এক আনসার সদস্যের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আগে এখানে রোগীর সিরিয়াল লেগে থাকত। কিন্তু এখন রোগী চোখেই পড়ে না। প্রতিদিন এখান থেকে সারি সারি লাশ বের হতো। এখন আর এমন চিত্র চোখে পড়ে না বললেই চলে। চারিদিকে কোনো সাড়া-শব্দ নেই। প্রতিদিন রোগীরা এখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
ঢামেকের করোনা ইউনিটে কর্মরত ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমেছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন বেশিরভাগ রোগী। করোনা ইউনিটে প্রায় ৬০০ শয্যা আছে এর মধ্যে প্রায় পৌনে তিনশর মতো শয্যা ফাঁকা আছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই কমছে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই রোগী ভর্তি কমেছে। শয্যা ফাঁকা রয়েছে অনেক। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমছে। এটা একটা ভালো সংবাদ। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এসএএ/আরএইচ