কমিশন সভা শেষে বক্তব্য রাখছেন ইসি সচিব মো. আলমগীর

প্রশিক্ষণের নামে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তোলা সাত কোটি টাকা নিয়ে আপত্তি তুলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অনুমোদন ছাড়া প্রশিক্ষণ ভাতা নেয়ায় কমিশনের বিপক্ষে অডিট আপত্তি এসেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তি বৈধ করতে নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এজন্য ৭৪তম কমিশন সভায় নীতিমালা সংশোধনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর।

রোববার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কমিশন সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, ‘যেহেতু অর্থ মন্ত্রণালয় জানতে চেয়েছে, সেহেতু ইসির পক্ষ থেকে যাচাই-বাছাই করে চিঠি পাঠাব। নীতিমালা সংশোধনের বিষয়টি প্রস্তুত করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মূলত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র পেলেই নীতিমালা সংশোধনে যাবে ইসি।’

তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বাইরে সিইসিসহ কমিশনাররা গেলে গাড়িতে পতাকা ব্যবহারের বিষয়টি থেকে সরে এসেছেন কমিশনাররা। তারা বলেছেন, যেহেতু বিচারপতিরা পতাকা ব্যবহার করেন না, সেহেতু কমিশনাররাও করবেন না।

কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের ‘প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা’র বিষয়টি উপস্থাপিত হয়। এছাড়া আজীবন পেনশন সুবিধা, আপ্যায়ন ও চিকিৎসা সুবিধার দাবি করেন তারা। আয়কর না দেয়ার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়।

ইসি সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রশিক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে সাত কোটি (সাত কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার) টাকা ভাতা বৈধ করতে নীতিমালা পাল্টে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংস্থাটি। চলতি সংসদ ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় বিধিবহির্ভূতভাবে প্রশিক্ষণের নামে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা ব্যয় দেখায় ইসি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার এবং ইসির কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ দেয়ার নামে ভাতা হিসেবে এত টাকা নেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এরপর এ বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদফতরও। অনিয়ম ধরা পড়ার পর নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) সেই সময়ের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুককে ঢাকা থেকে বদলি করা হয়। তিনি এর মধ্যে কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বরং এখন আইন পরিবর্তন করে বিষয়টি বৈধ করার প্রক্রিয়া চলছে।

কমিশন সভায় অনুমোদিত পদের বাইরে কোর্স উপদেষ্টা, বিশেষ বক্তা ও কোর্স পরিচালক— এই তিন ধরনের পদ রাখা এবং ওই পদের বক্তাদের বক্তৃতা ভাতা পরিশোধের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অন্যদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বেতন-ভাতা, পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত আইন-২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে বিচারপতিরা পান না এমন সুবিধাও রাখা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে পেনশন সুবিধাও।

প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, নিজ বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও দেশের ভেতর ভ্রমণে টিএ-ডিএসহ সব ভাতা চান কমিশনাররা। তারা মাসিক বেতন, অন্যান্য ভাতা চান উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সমান।ৎ

এসআর/এমএআর/