সরকার সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী কোনো কিছুই করবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (২০ মে) তার সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। গণমাধ্যমের যে কোনো বিষয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন। এসময় সাংবাদিকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাংবাদিকদের সুখে-দুঃখে এবং গঠনমূলক সাংবাদিকতার পথ অনুসরণে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে রয়েছেন। সাংবাদিকরা পেশাগত কারণে বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করেন। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী অপ্রকাশযোগ্য তথ্য ছাড়া অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। কিন্তু অভিজ্ঞ সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন তা সঠিক পদ্ধতি কি না তা ভেবে দেখার বিষয়। 

তিনি বলেন, গতকাল বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক এক পর্যায়ে নিজের ভুল স্বীকার করে মুখে মুচলেকা দেওয়ার কথা বলেছেন। চৌর্যবৃত্তি আর সাংবাদিকতাকে আমরা কি এক করে ফেলতে পারি? 

তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বের হওয়ার আগেই তার পক্ষে বা বিপক্ষে আন্দোলন কতটা যৌক্তিক, সেটাও সাংবাদিক বন্ধুদের ভেবে দেখার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, একজন অন্যায় করলে ঢালাওভাবে সবাই তো সেজন্য দায়ী নন। সচিবালয়ে প্রতিদিন সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন এবং তথ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু কেউ এভাবে লুকিয়ে ফাইলের ছবি তোলেন না বা নথি নিয়ে যান না। সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক নিজেও ভুল স্বীকার করেছেন। আত্মস্বীকৃত একজনের ভুলের জন্য সাংবাদিক বন্ধুদের এমন অবস্থান গ্রহণ কেন?

কাদের বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন, আইন সবার জন্য সমান। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন তাই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কাজে সরকার কোনরূপ হস্তক্ষেপ করবে না। 

তিনি বলেন, বিএনপি কাল্পনিক অভিযোগ আনলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার দমন-পীড়নে বিশ্বাসী নয়। বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। সেজন্য বিএনপির কোনো নেতাকে কোনো প্রকার হেনস্তা বা গ্রেফতার করা হয়নি।

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানায় এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা ও জনমতকে সম্মান করে। অপরদিকে বিএনপি জনমতকে উপেক্ষা করে বলেই নির্বাচনে গিয়ে দুপুরের আগেই সরে দাঁড়ায়, এমনকি নির্বাচিত হয়েও সংসদে না গিয়ে জনরায়কে অপমানিত করে। অথচ তারাই এখন জবাবদিহিতার সবক দিচ্ছে। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার অবাধ-তথ্যপ্রবাহ তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সরকারের উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক মনোভাবের কারণেই সাম্প্রতিককালে দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়ে সাংবাদিকদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশংসনীয়। 

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের ইস্যুতে কথা বলছেন অথচ তাদের সময় সাংবাদিক শামসুর রহমান, মানিক সাহা, হুমায়ুন কবির বালুসহ বেশকিছু সাংবাদিককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। অনেককে করা হয়েছে নির্যাতন, তা কি ভুলে গেছেন ফখরুল সাহেবরা? 

এইউএ/এসএম/জেএস