স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা ভিডিও ও ছবিতে থাকা ওই নারী স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম নন। এমনটাই দাবি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। 

একইসঙ্গে জেবুন্নেসা বেগমকে নিয়ে যেন সংবাদ প্রকাশ না করা হয়, সেজন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাকে জেবুন্নেসা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, তিনি প্রকৃতপক্ষে জেবুন্নেসা নন। 

এ ঘটনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম সামাজিকভাবে মর্যাদাহানির শিকার হচ্ছেন। রাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা এবং সাধারণ নাগরিক হিসেবে এতে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত জীবনের মর্যাদাহানি হচ্ছে। 

এ কারণে অনতিবিলম্বে বিষয়টি সব প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম সম্পর্কে অসত্য সংবাদ, ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রচার করা থেকে বিরত রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

তবে সেই চিঠিতে তথ্য অধিদফতরের প্রধান হিসেবে ‘প্রধান তথ্য কর্মকর্তা’র স্থলে ‘মহাপরিচালক’ উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে জেবুন্নেসার স্বামী মামুন আল রশিদ কাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম আমার স্ত্রী। তিনি রোজিনার গলা চেপে ধরেননি।

আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে কিছু বলার আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে যে, একজন নারী রোজিনা ইসলামের গলায় হাত দিয়েছেন। ওই নারীর পরিচয় আপনারা আগে জানুন। তিনি সেখানকার একজন ‘এও’ (প্রশাসনিক কর্মকর্তা)। আর তাকেই জেবুন্নেসা বলে দুনিয়ায় রটনা হয়ে গেছে। এত বড় একটি ঘটনা, এটি আগে যাচাই করতে হবে।
 
রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা হয়েছে একজন সচিব হিসেবে বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে এরকম হওয়া উচিত না। সাংবাদিকরা অত্যন্ত বড় রোল প্লে করে থাকেন। তাদের মাধ্যমে জনগণ দেশের সব তথ্য পেয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে আর মন্তব্য করার অবকাশ নেই। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করবেন, এটা সবাই চায়।

গত সোমবার (১৭ মে) সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ রাখার পর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। মামলায় রোজিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নথি চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।

টিআই/আরএইচ