স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

করোনাকালে কারাবন্দিদের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ কারণে বন্দিদের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, করোনাকালে বন্দিদের খাবারের মেন্যুতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দেওয়া হচ্ছে।

রোববার (২৩ মে) কারা অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দেশের তিনটি কারাগারে নবনির্মিত আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কারাগারকে যুগোপযোগী ও সংশোধনাগারে রূপান্তর করেছেন। এছাড়া কারাবন্দিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যাতে কারাগার থেকে বের হয়ে তারা কাজ করতে পারেন। 

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, কারাগারের পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক বদলেছে। আসামিরা ভালো পরিবেশে থাকছেন। তারা করোনাকালীন সময়ে ভার্চুয়ালি আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন। কারাগারের ভেতরে খরচের জন্য ‘বিকাশ’ ও ‘নগদে’ টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্দিদের মধ্যে করোনা যাতে না ছড়াতে পারে সেজন্য পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে তারা ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন।

তিনটি আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে মন্ত্রী দেশের ৩টি কারাগারে আইসোলেশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন। আইসোলেশন সেন্টারগুলো কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কিশোরগঞ্জ এবং ফেনী কারাগারে অবস্থিত।

উদ্বোধনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বন্দিদের সুরক্ষায় এই তিনটি কারাগারে আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন করা হলো। কোনো বন্দির মধ্যে যদি করোনার লক্ষণ দেখা যায় অথবা কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হন তবে তাকে এখানে রাখা হবে। ৩টি সেন্টারে মোট ১৩৯ জনকে রাখার ধারণক্ষমতা রয়েছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এখানে চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। কারা অধিদফতর ও ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রসের (আইসিআরসি) যৌথ উদ্যোগে সেন্টারগুলো চালু করা হয়েছে।

নতুন তিনটি ছাড়া দেশের কারাগারগুলোতে বর্তমানে আরও ৬টি আইসোলেশন সেন্টার রয়েছে। সেগুলো কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২, রাজশাহী ডিআইজি প্রিজন্সের বাংলো, দিনাজপুর জেলা কারাগারের অব্যবহৃত অংশ, মাদারীপুর জেলা কারাগার-২ এবং পিরোজপুর জেলা কারাগার-২তে অবস্থিত। কারাগারের কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এগুলো পরিচালনা করছেন।

অনুষ্ঠানে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার চালু করেছি। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসক নার্স নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমরা বন্দিদের জন্য নিয়মিত সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করে যাচ্ছি। এজন্য এ পর্যন্ত খুব বেশি কারাবন্দি করোনায় আক্রান্ত হননি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের সচিব মোকাব্বির হোসেন বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ে কারাবন্দিরা স্বাস্থ্যবিধি মানানো এবং তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়ার কারণে সংক্রমণ অনেক কম হয়েছে। আশা করছি, এবার দ্বিতীয় ঢেউয়েও সবার প্রচেষ্টায় বন্দিদের আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকবে।

অনুষ্ঠানে কারা অধিদফতর ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

এআর/এইচকে