সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শুধু মুক্তি দিলেই হবে না, তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায়ের যেসব কর্মকর্তা দুর্নীতিগ্রস্থ এবং যারা রোজিনাকে হেনস্তা করেছেন তাদেরও বিচার করতে হবে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।  

আজ (রোববার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ সব দাবি জানানো হয়। 

সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো কিছু প্রমাণ করতে পারেনি। এর পরেও জামিন দেওয়ার সময় শর্ত দিয়েছে তার পাসপোর্ট রেখে দিতে হবে। সরকারি চাকরির নিয়োগে যে ঘুষের লেনদেন চলে, সেগুলোর ডকুমেন্টসহ তিনি হাজির করেছেন। 

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিবের নামে তো ভিডিও বের হলো না। রোজিনার পাসপোর্ট রেখে দেওয়া মানে যারা লেখালেখি করেন, তাদের সতর্ক করা। অন্যদের বোঝানো, সরকারের যদি পছন্দ না হয় তাহলে পাসপোর্ট আটকে রাখা হবে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, করোনার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি রোজিনা ইসলাম প্রকাশ করেছেন। আর এ সরকারের অবস্থান হচ্ছে দুর্নীতির পক্ষে। দুর্নীতিবাজদের জেল হয় না, শাস্তি হয় না, শাস্তি হয়েছে রোজিনার। এ সরকার যেদিন সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলে, তার পরের দিন সাংবাদিক গ্রেফতার করা হচ্ছে, নয়তো কোনো সংবাদপত্র বন্ধ হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) মো. নুরুল হক নুর বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে যে নাটকীয়তা হলো, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকার গণমাধ্যম কর্মীদের বোঝালেন যে, তোমরা যত যা-ই করো না কেন, সবকিছুই শেষ পর্যন্ত সরকারের হাতে।

নুরুল হক নুর বলেন, সচিবালয়ের মতো জায়গাতে একজন গণমাধ্যমকর্মীকে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখার অধিকার কোনো সরকারি কর্মকর্তার নেই। তিনি যদি কোনো অপরাধ করতেন তবে তাকে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করতে পারতেন তারা। কিন্তু তা না করে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও বাংলাদেশের সংবাদপত্র চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সাংবাদিকেরা নিরাপদ নয়, কোনো সাংবাদিক আহত হচ্ছেন, গ্রেফতার হচ্ছেন, নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন, যা গণতন্ত্রের জন্য খারাপ। রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা হয়েছে কোনো সুস্থ সমাজে তা হয় না।

ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বলেন, রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকেরা একসঙ্গে রাজপথে নেমেছেন। সাংবাদিকদের একটা অংশ সরকার সাংবাদিকবান্ধব বলে তোয়াজ করছে। অথচ সাগর-রুনি খুন হয়েছে, বিচার হয়নি। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার হয়নি, তাহলে সাংবাদিকবান্ধব সরকার হয় কী করে?

এমএইচএন/এনএফ