একনেক সভায় ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত ‘কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প, কুষ্টিয়া (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটির সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন না দিয়ে তদন্ত করে পরের সভায় প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) এনইসি সম্মেলন কক্ষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলন করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উপস্থাপন করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির পরের সভায় তদন্তের প্রতিবেদন দিতে হবে। আইএমইডি সচিবের নেতৃত্বে প্রতিবেদনটি তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

কি কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। এর আগেও ২০১৮ সালে এ প্রকল্পটি নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এজন্য প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় বাড়ানোর কারণ ও ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন, বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

সভা সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য সচিব প্রকল্পের বিস্তারিত বলতে গেলে প্রধানমন্ত্রী থামিয়ে দিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারার পেছনে কারা কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২৭৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়ন মেয়াদ ছিল জানুয়ারি ২০১২ থেকে ডিসেম্বর ২০১৪ সাল পর্যন্ত। কিন্তু গত আট বছরে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রকল্পটি প্রথম অনুমোদনের পর দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৬ সাল পর্যন্ত করা হয়। এরপর প্রথম সংশোধন করা হয়। প্রথম সংশোধনীর পরও প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত করা হয়। মঙ্গলবার দ্বিতীয় সংশোধনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হলে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি ফিরিয়ে দেন। এরইমধ্যে গত আট বছরে প্রকল্পটির ব্যয় তিনগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য- চিকিৎসা শিক্ষার জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করা, চিকিৎসক তৈরির মাধ্যমে চিকিৎসক এবং জনসাধারণের আনুপাতিক হার যৌক্তিক করা, চিকিৎসা শিক্ষাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা, প্রান্তিক জেলায় তৃণমূল জনসাধারণ পর্যায়ে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা, চিকিৎসা শিক্ষার চাহিদা পূরণ করা, হাসপাতালকে ক্লিনিক্যাল এবং ব্যবহারিক পরীক্ষাগার হিসেবে মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপযোগী করা, কুষ্টিয়া ও তার পার্শ্ববর্তী জেলার জনগণের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া, উপযুক্ত এবং আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার উপযোগী পরিকাঠামো তৈরি করা, বিশেষ পরিষেবা দেওয়ার মাধ্যমে বিনামূল্যে কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, শিশু এবং মাতৃ-মৃত্যুর হার হ্রাস নিশ্চিত করা, চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা এবং চিকিৎসক ও অন্যান্য পেশার জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।

একনেকে ৬ প্রকল্প অনুমোদন

জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণসহ ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৫৬৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যাবে তিন হাজার ৮৬৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বৈদেশিক ঋণ পাঁচ হাজার ৭০১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এসআর/জেডএস