ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে বিমে আটকে পড়া বিড়ালটি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের( ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

রোববার (২ মার্চ) ভোর সাড়ে পাঁচটায় খাঁচার মধ্যে বিড়ালটি পান ও নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হোন। 

সরেজমিনে উদ্ধারকাজ পরিদর্শন করেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের ঠিক ওপরের অংশে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে বিমে আটকে ছিল একটি বিড়াল। খবর পেয়ে বিড়ালটি উদ্ধারে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চেষ্টা চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বিড়ালটি আটকে পড়ার খবরটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জানতে পেরে রাতে সেচ্ছাসেবক আরিজ উল মুলকের নেতৃত্বে উদ্ধারকাজে যোগ দেন চারজন স্বেচ্ছাসেবী।

সন্ধ্যা থেকে ডিএনসিসির দুটি লেডারের সাহায্যে উদ্ধার চেষ্টার পর রাত ১০টায় স্বেচ্ছাসেবক আরিজ উল মুলক বিড়ালটি ধরতে একটি বিশেষ ধরনের খাঁচা (ফাঁদ) নিয়ে আসেন। বিড়ালটিকে নিরাপদে উদ্ধার করতে বিমের উপরে ফাঁদের (খাঁচা) মধ্যে খাবার দিয়ে রেখে যান। পরে (রোববার ২ মার্চ) ভোর সাড়ে পাঁচটায় এসে খাঁচার মধ্যে বিড়ালটি পান ও নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হোন।

ডিএনসিসির কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান বিড়ালটিকে উদ্ধারের পরে বারিধারায় একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং মোহাম্মদপুরের একজন স্বেচ্ছাসেবক বিড়ালটি লালন পালনের জন্য নিয়ে গেছেন। বিড়ালটি এখন পুরোপুরি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন আরিজ উল মুলক।

গতকাল শনিবার বিকেলের দিকে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের ঠিক ওপরের অংশে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে বিমে আটকে থাকা বিড়ালটিকে দেখতে পেয়ে নগরবাসীর কেউ একজন বিষয়টি ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে জানান। পরে তিনি বিড়ালটিকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। বিড়ালটিকে উদ্ধারে মহাখালী উড়ালসড়কের ওপরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে একটি বিমের বর্ধিত অংশে একটি লেডার যন্ত্র ওঠানো হয়েছে। ওই লেডারে করে সিটি করপোরেশনের দুই কর্মী ওপরে গিয়ে বিড়ালটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু বিড়ালটি ভয় পেয়ে দূরে সরে যেতে দেখা যায়। পরে আরেকটি লেডার দিয়েও চেষ্টা চালানো হয়। বিড়ালটি আতঙ্কিত হয়ে বিমের প্রান্তে অবস্থান নিলে রাত ১০টায় লেডার নামিয়ে আনা হয়। পরে একটি ফাঁদ (খাঁচা) দিয়ে তাতে খাবার দেওয়া হয়। ভোর সাড়ে পাঁচটায় এসে খাঁচার মধ্যে বিড়ালটি পান ও নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হোন স্বেচ্ছাসেবী আরিজ উল মুলক।

বিড়ালটি উদ্ধারে স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকার কথা জানার পরে ডিএনসিসি প্রশাসক বিকেলে গুলশান নগরভবনে তার কার্যালয়ে উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেওয়া আরিজ উল মুলক এবং তার সহযোগী আকাশ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি বিড়ালটি উদ্ধারের জন্য তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান।

আরিজ উল মুলক জানান তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় বিপদে পড়া প্রাণীদের নিজের চেষ্টায় উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এটি তিনি প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই করেন।

ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, আটকে পড়া বিড়ালটি উদ্ধারে আপনারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এগিয়ে এসেছেন এটা নিঃসন্দেহে একটা মহৎ উদ্যোগ। বিড়ালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আটকে ছিল, উদ্ধারের জন্য ডিএনসিসির কর্মীরা দুটি লেডার নিয়ে চেষ্টা চালায়, আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। আপনারা বিশেষ এই খাঁচার মাধ্যমে বিড়ালটি নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। সমাজের সুনাগরিকের পরিচয় দিয়েছেন। এমন কাজের জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

এএসএস/এআইএস