সম্প্রতি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, সরকার পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দিক। এ কথার উত্তরে অন্য একটি অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘এটি বিএনপির এজেন্ডা।’ এবার সেই কথার উত্তরে জাফরুল্লাহ চৌধুরী তথ্যমন্ত্রীকে বললেন, মুখ খোলার আগে অতীত চিন্তা করে দেখুন।

বুধবার (২ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত ‘নির্বাসিত গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদের সমালোচনা করে জাফর উল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের এক তথ্যমন্ত্রী আছেন, হাছান মাহমুদ। হাটহাজারী মাদরাসা থেকে পাস করে ডক্টরেট সম্পন্ন করেছেন। আমি বলেছিলাম, পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দিতে। উনি বললেন, এটা নাকি বিএনপির এজেন্ডা। আপনারা তো শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা করেন না, প্রাণে ধরেন না। আপনারা শুধু আওয়ামী লীগ আর ছাত্রলীগের কথা বলেন। আমরা যারা তাকে মন থেকে শ্রদ্ধা করেছি, তার প্রত্যেকটা কার্যকলাপকে মনে রেখেছি। পাকিস্তানকে ক্ষমা করেছেন শেখ মুজিব। জুলফিকার আলী ভুট্টোকে বাংলাদেশে এনে গণসংবর্ধনা দিয়েছিলেন তিনি। এটা কি ক্ষমা করা নয়? আমরা সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা আপত্তি করেছিলাম, কিন্তু তিনি সেটা না মেনেই গণসংবর্ধনা দিয়েছিলেন। মুখটা খোলার আগে ডক্টর সাহেব অতীত চিন্তা করে দেখবেন।

জাফরুল্লাহ বলেন, আজকে খালেদা জিয়াকে কেন আটকে রেখেছেন? তারচেয়ে শতগুণ বেশি অপরাধ করেও অপরাধীরা জামিন পেয়েছে। প্রধান বিচারপতি আপনি কেন জামিন দিতে পারেন না? খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজনকে বলি, নাজিমুদ্দিন রোডের জেলে থাকার চেয়ে ফিরোজার জেলে থাকা আরও খারাপ।

বিএনপিকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় দাবি করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যেতে চেয়েছেন। যুক্তরাজ্য নয় পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় চিকিৎসা করানোর অধিকার তার আছে। কর্মীদের আমি বলেছি, জিয়াউর রহমানের জন্য ১৫ দিনের প্রোগ্রাম না করে খালেদা জিয়ার জন্য ১৫ দিনের মুক্তির আন্দোলন করেন। খালেদা জিয়া আপনাদের মুক্তির আলো দেখাতে পারবেন, কিন্তু জিয়াউর রহমান পারবেন না। জিয়াউর রহমানকে শ্রদ্ধা করবেন, মনে রাখবেন, উনার জন্য দোয়া করবেন।

অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আগামীকাল দেশের বাজেট ঘোষণা করা হবে। অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান আছে, সবাই বলছে করোনাকে মোকাবিলা করার জন্য বিশেষভাবে বাজেট ঘোষণা করতে। কেউ প্রস্তাব করেছেন ৬ মাস মেয়াদি বাজেট ঘোষণা করতে, যাতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক উন্নতি করা যায়। অনেকে বলেছেন, করোনাকালে যে ২ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে। এই সরকার টিকা আনতে ব্যর্থ হয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকা ইউরোপের অন্যান্য দেশ কিনেছে দুই ডলারে আর আমরা কিনেছি ৪ ডলারে।

তিনি বলেন, জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ, তখনও তারা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কাজে রয়েছে। এজন্যই বলছি, এই সরকার সম্পূর্ণ অমানবিক। কালকে যে বাজেট ঘোষণা করা হবে সেখানে এই বিষয়ে কোনো বিশেষ বাজেট নেই। চোরদের হাতে যদি টাকা দেন তাহলে সেই টাকার নিশ্চয়তা কে দেবে?

এমএইচএন/এসকেডি