অক্সিজেনের চাহিদা বাড়িয়েছে করোনা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে অক্সিজেনের চাহিদা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির পর কাজের চাপ বেড়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আউটডোর (বহির্বিভাগ), মেডিসিন ষ্টোর ও অক্সিজেন ষ্টোরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। চলমান এ সংকটে হাসপাতালটিতে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে পূর্বের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি। পাশাপাশি চাপ বেড়েছে স্যালাইন ও ঠান্ডাজনিত ওষুধেরও। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মেডিসিন ষ্টোরে কাজ করা একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ষ্টোর ইনচার্জ বলেন, আউটডোরে যারা কাজ করছেন তাদের চাপটা এখন একটু বেশি। যেহেতু ঠান্ডার সিজন, তার ওপর আবার করোনাভাইরাস। তাই হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত ওষুধের চাহিদা এখন অনেকটাই বাড়তি। তবে অন্যান্য ওষুধের চাপ স্বাভাবিক রয়েছে।
মেডিসিন ষ্টোর সহকারী জসিম উদ্দিন বলেন, কাজের চাপ তো আছেই। করোনা রোগী আসার পর থেকে স্বাভাবিকভাবে আমাদের চাপ কিছুটা বেড়ে গেছে। ক্যানোলা, স্যালাইনসহ অনেক কিছুর চাপই এখন বাড়তি। তাই আমাদেরও দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র ষ্টোর অফিসার ডা. মো. সায়াদ উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢামেকে মেডিসিন বিভাগ এখনও বন্ধ রয়েছে। মেডিসিন বিভাগ বন্ধ থাকলেও রোগীর চাপ তো কমেনি। করোনা উপসর্গ নিয়ে যারাই আসছেন, তারা সবাই ভর্তি হচ্ছেন। শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে সার্জারি বিভাগের যেসব রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরকে আলাদা রাখা হয়েছে। তাছাড়া নতুন বিল্ডিংয়ের রয়েছেন সব করোনা আক্রান্ত রোগী। তাই ঢাকা মেডিকেলে এখন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশরেও বেশি অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে। কিছু কিছু ওষুধ যেগুলো করোনার রোগীদেরও দিতে হচ্ছে, সেগুলোর চাপ বেড়েছে তিনগুণ।
• একজন স্বাভাবিক রোগীর প্রতি মিনিটে ২-৩ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হলেও, করোনা রোগীর জন্য লাগছে ২০-৭০ লিটার।
• চাপ বেড়েছে স্যালাইন, ক্যানোলা, ঠান্ডাজনিত ওষুধেরও। করোনা রোগীদের ওষুধের চাহিদা বেড়েছে তিনগুণ।
• যাদের ৪০ থেকে ৭০ মাত্রায় অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে, তাদের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লাস হাই ফ্লো মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে আগে ২ থেকে আড়াই হাজার লিটারের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সেটা বেড়ে প্রায় ৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এদিকে যখন লকডাউন ছিলো তখন আউটডোর বন্ধ ছিল। পরে আউটডোর চালু হওয়ার কারণে রোগীর সঙ্গে বেড়েছে ওষুধের চাপও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢামেক অক্সিজেন ষ্টোরে কর্মরত এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি অক্সিজেন বোতলে ১ হাজার ৩৬০ লিটার অক্সিজেন থাকে। একজন স্বাভাবিক রোগীর জন্য প্রতি মিনিটে ২ থেকে ৫ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। তখন এক বোতল ১৩শ লিটার অক্সিজেন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা চলত। তবে একজন করোনা রোগী যদি সর্বনিম্ন গতিতে প্রতি মিনিটে ২০ লিটার অক্সিজেন নেয় তাহলে এক বোতল শেষ হতে মাত্র আধাঘণ্টা সময় লাগে। এছাড়া কোনো করোনা রোগীর যদি ৪০ থেকে ৭০ মাত্রায় অক্সিজেন প্রয়োজন হয় সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লাস হাই ফ্লো মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে।
রোগীর অক্সিজেন নিশ্চিত করার বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এমএইচএস