সোনালী আঁশ পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলো বাধ্যতামূলক, অনুরোধ আর প্রকল্পে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

রোববার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে টেবিলে উপস্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যে এমনটাই দেখা যায়। 
  
ময়মনসিংহ-১১ আসনের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন মন্ত্রী। 

তিনি জানান, কয়েকটি পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনের আওতায় মোট ১৯টি পণ্য (ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুড়া, পোল্ট্রি ও ফিশফিড) মোড়কে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতি বছর প্রায় ১৫০ কোটি পাটের বস্তার চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, সরকার প্রতিবছর ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস পালন করছে। পাট দিবস উপলক্ষে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী পাট পণ্যের মেলার আয়োজন করা হয়। পাট দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সভা-সেমিনার, বেতার-টিভিতে টক শো, গোলটেবিল বৈঠক, প্রিন্ট মিডিয়ায় কলাম লেখালেখি ইত্যাদি মূল বিষয় হিসেবে দৈনন্দিন কাজে পাটের তৈরি দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহারের যথেষ্ট প্রচার-প্রচারণা হয়ে থাকে। বিশ্ব বাজারে পাটপণ্যের রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে পাটপণ্যের মেলা আয়োজন এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধি পাঠানোর মাধ্যমে বিদেশে পাটের নতুন নতুন বাজার খোঁজার কার্যক্রম নেওয়া হয়।

তিনি জানান, সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউশনগুলোতে পাট ও পাটপণ্যের ব্যবহার বাড়ানো এবং এ সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ শিডিউলে অন্তর্ভুক্তকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাটের ব্যাগে বই বিতরণের কার্যক্রম নেওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। দাফতরিক কাজে বহুমুখী পাটপণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বন বিভাগ গাছের চারায় পলিথিন শিটের পরিবর্তে পাটের তৈরি নার্সারি পট ব্যবহারের জন্য প্রধান বন সংরক্ষককে ডিও পত্রের মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়েছে। মানসম্মত উচ্চফলনশীল পাট ও পাটবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাট চাষিদের সার্বিক কল্যাণে সরকার উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি মার্চ ২০২৩ সালে শেষ হবে।

এইউএ/জেডএস