সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা না করেই জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ (এনআইডি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার মতে, এটা সংবিধানের ওপর নগ্ন হামলা করেছে সরকার।

রোববার (৬ জুন) ‘সরকার কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার উদ্যোগ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল নাগরিক সংলাপ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সুজন সম্পাদক। সংলাপটি আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। এতে ড. বদিউল আলম মজুমদার সভাপতিত্ব করেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। যার ফলে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক নির্দেশনা দিয়ে এনআইডি, জনবল এবং অবকাঠামো কোনভাবেই নিতে পারবে না সরকার। এক কথায় এটা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, সরকার যদি এটা করতেই চায় তাহলে অন্যভাবে করতে পারে। তারা যদি চায় এটা জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে করতে পারে।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন হলো, সবচেয়ে বড় কথা কী উদ্দেশে সরকার এটা করতে চাইছে। এনআইডির কাঠামোটা যদি সরকারের হাতে যায় তাহলে এটা তারা রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করতে পারবে। যাকে ইচ্ছা তাকে ডেটাবেজ যুক্ত করতে পারবে এবং যাকে ইচ্ছা তাকে বাদ দিতে পারবে। এছাড়াও এটা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে যাবে এবং দুর্নীতি ও অপব্যবহারের অনেক সুযোগ থেকে যাবে।

সুজন সম্পাদক বলেন, সবচেয়ে বড় কথা আগামী জাতীয় নির্বাচন কিন্তু ইভিএমে হবে। এ ইভিএমে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এটা তো জায়েজ করতে হবে। এজন্য আগামী নির্বাচন ইভিএমে হবে। চট্টগ্রাম নির্বাচনে আমরা দেখেছি কীভাবে ইভিএমে নির্বাচন টেম্পারিং করা যায়। চট্টগ্রাম নির্বাচনে অন্ত্যত দুইবার ভোটের রেজাল্ট দেওয়া হয়েছে। ইভিএম দিয়ে কিন্তু তা হওয়ার কথা নয়। এছাড়াও অনেকবার ইভিএমের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র, এনআইডি, ডাটাবেজ যদি সরকারের হাতে যায় তাহলে সরকার বিভিন্ন রকম কারসাজির মাধ্যমে কাউকে ভোটার লিস্টে যুক্ত করতে পারে আবার কাউকে বাদ দিতে পারবে। সরকারের হাতে এনআইডির নিয়ন্ত্রণ চলে গেলে রাজনৈতিক উদ্দেশের অপব্যবহারের সুযোগ থাকবে।
  
সুজনের সংলাপে যুক্ত ছিলেন, সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটি এম শামসুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, বিচারপতি এম এ মতিন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার প্রমুখ।

এসআর/এসএম