অভিনেত্রী পরীমণি

অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের বিষয়টি তদন্তে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। তবে পরীমণি পুলিশে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে দেওয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাস নজরে আসার পর পুলিশ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।  

রোববার (১৩ জুন) রাতে ঢাকা পোস্টকে পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক এআইজি সোহেল রানা এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘পরীমণির ফেসবুক স্ট্যাটাস পুলিশ সদরদফতরের নজরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।’

পুলিশ সদরদফতরের একজন পুলিশ সুপার (এসপি) সমমর্যাদার কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পরীমণির অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। তিনি পুলিশের প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত সেবা পাবেন। উপযুক্ত বিচার পাবেন।’ 

অভিযোগের সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হলে পরীমণি বলেন, ‘যা বলেছি সত্য বলেছি। আমি এর বিচার চাই। ১০ জুন থেকে আমি ট্রমার মধ্যে আছি। ভুলে যাওয়ার অনেক চেষ্টা করছি, পারছি না। চেষ্টা করেছি বিচার পাওয়ার জন্য। কিন্তু সবখানে নীরবতা। বিচারের আশ্বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে এই পোস্ট দিয়েছি।’

কোথায় তার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। কে বা কারা তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে সে বিষয়ে স্ট্যাটাসে কিছু লেখেননি পরীমণি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পরীমণিকে আরেকবার ফোন দেওয়া হলে তার পরিবারের সদস্য দাবি করা একজন ফোন রিসিভ করেন। তিনি বলেন, ‘পরীমণি তার নানাকে খাওয়াচ্ছেন। তিনি পরে কথা বলবেন।’ 

আজ রোববার রাত ৮টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে স্ট্যাটাস দেন। চাঞ্চল্যকর এই খবর জানিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চান। 

ফেসবুক পোস্টে পরী লেখেন, ‘বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এই বিচার কই চাইব আমি? কোথায় চাইব? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু বেনজীর আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে ‘দেখছি’ বলে চুপ হয়ে যায়।’ 

এ নায়িকা আরও লেখেন, ‘আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো।

আফসোস ছাড়া কারোর কী করবার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কী করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোন অন্যায় মেনে নিতে! আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহুর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্যে দরকার।

আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্যে আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাচঁতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’

এআর/এইচকে