রোহিঙ্গা নারীকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, জাতীয়তা সনদপত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিসের ৫ কর্মচারীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন : ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক নুর আহম্মদ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অফিসার মো. সাইফুদ্দিন, কেরানীগঞ্জ থানা নির্বাচন অফিসের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সত্য সুন্দর দে, মির্জাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আবছার, মির্জাপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম, মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক জন্মসনদ প্রস্তুতকারী মোহাম্মদ বেলাল, মো. ছালাম, মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, রোহিঙ্গা নারী লাকী আক্তার ও তার স্বামী নজির আহম্মদ।

দুদক চট্টগ্রামের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া পরিচয় ও নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র, জাতীয়তা সনদপত্র ও জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করেন। পরে ওই সনদ দেখিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করার চেষ্টা করেন রোহিঙ্গা নারী লাকী ( রমজান বিবি)।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, লাকী ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৩ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয়তা সনদপত্র পান। এতে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছারের স্বাক্ষর রয়েছে। পরে এনআইডি ও জাতীয়তা সনদপত্র দিয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন লাকী। এছাড়া একইভাবে তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও জান্নাতুল বাকিয়া পাসপোর্টর জন্য আবেদন করেন।

লাকীর নিবন্ধন ফরম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রথম পৃষ্ঠা জাল করে আপলোড করা হয়েছে। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিসের সার্ভার থেকে ডাটাসমূহ আপলোড করা হয়। আর নিবন্ধন ফরমটি সরবরাহ করেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক নুর মোহাম্মদ। ডাটা আপলোড করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অফিসার মো. সাইফুদ্দিন। ডাটা ক্রিয়েট করেন মো. জয়নাল আবেদিন। আসামি লাকী হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে বৈধ উপায়ে তালিকাভুক্ত হননি। লাকীর স্বামী এনআইডি করে এরই মধ্যে বিদেশ চলে গেছেন। এবার মেয়ে ও স্ত্রীর এনআইডি তৈরির জন্য ছালামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা।

ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরিতে আসামিরা একে অপরকে সহায়তা করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

কেএম/এসকেডি