সারাদেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান চলাচল বন্ধে সড়ক পরিবহন টাস্কফোর্সের নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। 

সোমবার (২১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। এতে স্বাক্ষর করেন পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দেড় বছর টানা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত নানা পেশার শ্রমিক এবং কর্মহীন, বেকার ও ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকের পাশে সরকার ও মালিক শ্রেণি দাঁড়ায়নি। করোনাকালে নতুন করে আড়াই কোটি মানুষসহ দেশের ৫০ ভাগের বেশি মানুষ যখন যখন দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে, সেই সময়ে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে কর্মরত ৫০ লাখ রিকশা, ব্যাটারি রিকশা ও ভ্যান, ইজিবাইক, নসিমন, করিমনচালককে বেকার ও কর্মহীন করার চক্রান্ত চলছে। 

টাস্কফোর্সের সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব জায়গায় আমরা যানবাহনের ব্যবস্থা করতে পারনি। পণ্য ও যাত্রী পরিবহণে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভ্যান বিকল্প হিসেবে কাজ করছে’। তখন কার্যত তিনি এর অপরিহার্যতা স্বীকার করছেন। কিন্তু সুপারিশ বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এ পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত ৫০ লাখ চালক ও তাদের পরিবার পরিজনের জীবন জীবিকার বিষয়ে কিংবা সারাদেশের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ যারা এর সুফল ভোগ করছেন তাদের জন্য আপনারা কী ভেবেছেন?

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টাস্কফোর্সের সভায় ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্রেক পদ্ধতি বা তার কাঠামোগত দুর্বলতার বিষয়ে দুর্ঘটনার কারণ দেখিয়ে তা রাস্তা থেকে থেকে উচ্ছেদের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেই কাঠামোগত দুর্বলতা কাটানোর কোনো সুপারিশ না করে রাস্তা থেকে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত অনেকটা মাথা ব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার মতো। আজ ডিজিটাল যুগে এসে ম্যানুয়াল প্যাডেলচালিত রিকশায় মানুষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শারীরিক কষ্টকে লাঘব করতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক। ফলে টাস্কফোর্সের সভায় নেওয়া এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী।

বিবৃতিতে বলা হয়, সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বিগত আট বছর ধরে নকশা আধুনিকায়ন ও নীতিমালা প্রণয়ন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকসহ যান্ত্রিক যানবাহনের লাইসেন্স প্রদানসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তিন দফা দাবিতে গত ১৫ মার্চ ঢাকায় সমাবেশ ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। 

আন্দোলনের চাপে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দু দফা বৈঠক করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের উপযোগিতা, কাঠামোগত দুর্বলতা নিরসন ও লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করার জন্য বিআরটিএকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিও ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইককে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে তুঘলকি কায়দায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরিবহণ মালিকদের উপস্থিতিতে টাস্কফোর্সের সভায় এ গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনো চক্রান্তের অংশ কি না, তা জাতি জানতে চায়।

এমএইচএন/আরএইচ