কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিন দিন আগে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মো. রমজান আলী। শয্যা না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাকে। অ্যাজমার রোগী হওয়ায় মেঝেতে থাকতে কষ্ট হচ্ছে তার। কিন্তু কিছুই করার নেই। 

করোনা রোগীর অতিরিক্ত চাপে কুর্মিটোলা হাসপাতালে শয্যা পাচ্ছেন না রমজান আলী। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে একটি শয্যার জন্য। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সে শয্যা শেষ পর্যন্ত পাওয়া হয়নি। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে রমজান আলীর ছেলে লতিফ এসব তথ্য জানান।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীর জন্য শয্যা রয়েছে ২৭৫টি। তবে বর্তমানে ভর্তি রোগীর সংখ্যা তিনশর বেশি। এ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা রয়েছে ১০টি। ফাঁকা নেই একটিও। ফাঁকা নেই ১৫টি এসডিও শয্যাও। গত কয়েকদিনে বেড়েছে রোগীর চাপ। শয্যা কিংবা আইসিইউতে সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের জায়গা হচ্ছে মেঝেতে। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দুজন সুস্থ হয়ে ফিরে যান তো পাঁচজন এসে ভর্তি হন। এতে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের। জায়গা না থাকায় প্রতিদিন অনেক রোগীকে ফেরত দিতে হচ্ছে।

বুধবার (২৩ জুন) দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩০০ জন করোনা রোগী। গতকাল এ সংখ্যা ছিল ৩০৩। তিনজন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আজ সকালেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রেও আইসিইউ শয্যা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।   

হাসপাতালে ভর্তি একাধিক রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের রোগীর অবস্থা ভালো না। রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউতে স্থানান্তরের প্রয়োজন হলেও তা করা যাচ্ছে না।

বড় বোনকে দেখতে হাসপাতালে এসেছেন ইয়াকুব। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, রোগীর অবস্থা খুব একটা সুবিধার না। গত তিন দিন ধরে আইসিইউতে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কোনো চেষ্টাই কাজে আসছে না। এখন আল্লাহর ওপর ভরসা করা ছাড়া কিছু করার নেই। আরেক রোগীর স্বজন জানান, রোগীর জন্য শয্যা পেতে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। এর আগে মেঝেতেই থাকতে হয়েছে। 

কুর্মিটোলা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রাশিদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল আমাদের ৩০৩ জন রোগী ছিলেন। আজ তিনজন রিলিজ নিয়ে চলে গেছেন। গত এক সপ্তাহে রোগীর পরিমাণ অনেক বেড়েছে। শয্যা ফাঁকা নেই। মেঝেতে রোগী রাখতে হচ্ছে। করোনা রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা ২৭৫টি। আইসিইউ শয্যা ১০টি, একটিও ফাঁকা নেই।

তিনি জানান, খরচ কম হওয়ার কারণে অনেক রোগী বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল থেকে ভর্তি বাতিল করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চলে আসেন। ঢাকার সঙ্গে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না থাকলে রোগীর সংখ্যা আরও বেশি হতো বলে জানান এ চিকিৎসক।

এনআই/আরএইচ/জেএস